শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত চারটি ইউনিয়নের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে। বন্যার পানি সরে না যাওয়ায় চারটি ইউনিয়নের ৭১টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে গতকাল সোমবার সারা দিন রোদ থাকলেও আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে ফের থেমে থেমে বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
এদিকে নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে উপজেলার গুনাপাড়া গ্রামে বন্যার পানিতে পড়ে জিমি আক্তার (৮) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। জিমি আক্তার শেরপুর সদরের কড়ইতলা এলাকার জামান মিয়ার সন্তান। গতকাল শেরপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে জিমি আক্তার নালিতাবাড়ী বেড়াতে এসেছিল। এই নিয়ে উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলায় উজানের ঢল ও অতিবৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল কলসপাড়, যোগানিয়া, মরিচপুরান ও রাজনগর ইউনিয়নের ৭১টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানি বাড়ার কারণে তিনটি ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তা উপচে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অধিকাংশ গ্রামের চারপাশ পানিতে ডুবে আছে।
শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল রাত ৯টায় ভোগাই নদের পানি বিপৎসীমার ১৬০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
গাগলাজানি গ্রামের কৃষক সুলতান হোসেন বলেন, আঙিনায় কোমরপানি আর ঘরে হাঁটুপানি। সবকিছু তাঁরা চকির ওপরে রেখেছেন। গতকাল রোদ থাকলেও আজ আবার বৃষ্টি পড়া শুরু করছে।
কাপাসিয়া গ্রামের গৃহিণী রমিছা বেগম বলেন, ‘আমগর বাড়িঘরে পানি। বাহিরে বাইর হওয়ার সুযোগ নাই। গরু–ছাগল সড়কে রাখছি। রাইত জাইগা গরু পাহারা দেওন লাগে। গতকাল রোদ আছিল, মনে করছিলাম পানি কমতে শুরু করব। কিন্তু আজ সকাল থাইকা বৃষ্টি পড়তাছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে। তবে গতকাল থেকে কিছু কিছু স্থানে পানি কমতে শুরু করেছে। আজ সকাল থেকে আবার থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। বন্যার্তদের সহযোগিতায় সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে।