পায়রা বন্দর এলাকায় এক্সিলারেট এনার্জির এলএনজি টার্মিনাল প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বরিশালের পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। তাঁরা সরকারের এ সিদ্ধান্তকে দেশের পরিবেশ সংরক্ষণ, অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষা ও জ্বালানিনীতি পুনর্বিন্যাসের ক্ষেত্রে এক অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করেছেন।
আজ রোববার দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর নেতারা এই অভিমত দেন। ফোরাম অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বরিশাল, প্রান্তজন, উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশবিষয়ক কর্মজোট এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট যৌথভাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকেরা জানান, পায়রায় সম্প্রতি বাতিলকৃত এলএনজি টার্মিনাল প্রকল্পটি পেট্রোবাংলার মালিকানাধীন এবং এক্সিলারেট এনার্জি নির্মাণের দায়িত্বে ছিল। এটি বাস্তবায়িত হলে টার্মিনালটিকে ভাসমান স্টোরেজ এবং রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট স্থাপন করে পাইপলাইন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করতে এই কোম্পানিকে শুধু ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদই প্রতিদিন প্রায় সাড়ে চার লাখ ডলার দিতে হতো।
ফোরাম অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বরিশালের সদস্যসচিব সুভাস দাস বলেন, বর্তমানে দুটি সক্রিয় এলএনজি টার্মিনাল প্রতিদিন প্রায় ৪ দশমিক ৫ লাখ ডলার ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে, যা বৈদেশিক মুদ্রার ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করছে। এ ছাড়া এলএনজিনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন সরাসরি গ্যাসের আমদানি খরচের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় এই খরচ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের ওপর বাড়তি বোঝা তৈরি করছে।
সুভাস দাস বলেন, গ্যাসের আমদানি খরচ বাড়লে প্রতি ইউনিট গ্যাসের জন্য সরকারকে যে পরিমাণ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে, তা আরও বৃদ্ধি পাবে। এই বর্ধিত উৎপাদন ব্যয় জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতাকে হ্রাস করবে এবং দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে বিঘ্নিত করবে। এ ছাড়া এক্সিলারেট এনার্জির প্রস্তাবিত পাইপলাইন এবং পুনরায় গ্যাসীকরণ অবকাঠামো স্থাপনের জন্যও বিশাল বিনিয়োগের প্রয়োজন হতো। সর্বোপরি, এই ব্যয়বহুল পদ্ধতি দীর্ঘ মেয়াদে দেশের জন্য টেকসই নয় বরং জনভোগান্তির কারণ হতো।
সংবাদ সম্মেলনে ফোরাম অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বরিশালের সদস্য অধ্যাপক শাহ্ সাজেদা বলেন, সরকারের এ সিদ্ধান্তকে দেশের পরিবেশ রক্ষা ও টেকসই উন্নয়নের পথে একটি সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করা যায়।