নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ৫০ বছর বয়সী এক নারীকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে মারধর ও ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী নারীর দাবি, তাঁর মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টার সময় বাধা দেওয়ার কারণে তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আজ শুক্রবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ থানায় এ বিষয়ে মামলা করেছে ভুক্তভোগী পরিবারটি।
এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যায় ওই নারীকে নির্যাতন করা হয় বলে মামলায় অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। মো. রিয়াদ (২৩) ও মো. মেহরাজ (২৪) নামের দুই যুবকের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়।
নির্যাতনের শিকার নারী প্রথম আলোকে বলেন, ভিটেমাটি না থাকায় স্বামী, দুই মেয়ে এবং এক ছেলেকে নিয়ে তিনি তিন বছর ধরে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন জায়গায় বসবাস করে আসছেন। রিয়াদ ও মেহেরাজ ওই জমি দখলের চেষ্টা করে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁদের বেশ কয়েকবার উচ্ছেদের চেষ্টা করেন।
তিনি বলেন, তাঁর বড় মেয়ে বিবাহিত। ওই মেয়ে তাঁর তিন মাসের শিশুসন্তানকে নিয়ে ঘরের একটি কক্ষে ছিলেন। হঠাৎ ওই কক্ষ থেকে চিৎকার–চেঁচামেচি শুনে গিয়ে দেখেন, মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ সময় রিয়াদ ও মেহরাজকে তিনি বাধা দিয়ে মেয়েকে রক্ষা করেন। তবে রিয়াদ ও মেহরাজ এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে ওড়না দিয়ে মুখ বেঁধে ফেলেন। পরে টেনেহিঁচড়ে বাড়ির পুকুরের সামনে নিয়ে গিয়ে গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে মারধরসহ নির্যাতন করেন। পরে প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
ওই নারী আরও বলেন, তিনি অন্যের বাড়িতে গৃহস্থালির কাজ করেন। এ অবস্থায় পরিবারের নিরাপত্তা ও বাসস্থান নিয়ে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
মুছারপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. জাকির হোসেন বলেন, লোকমুখে তিনি বিষয়টি শুনেছেন। তবে ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ এ বিষয়ে তাঁকে জানাননি।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত রিয়াদের বাবা অলিউল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে জায়গা বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় ওই নারীকে দিয়ে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে তাঁদের ভিটেমাটি ছাড়া করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ ঘটনা সাজানো হয়েছে। তাঁর ছেলে এবং ভাতিজা ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুস সুলতান প্রথম আলোকে বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।