‘নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। আজ বিকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদে
‘নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।  আজ বিকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদে

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

‘ছাত্ররাজনীতির নামে এখন ছাত্র ব্যবসা চলে’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেছেন, ‘ছাত্ররাজনীতি নামে এখন ছাত্র ব্যবসা চলে। আমার ছাত্ররা রাজনীতি নিয়ে সজাগ থাকবে। তারা সজাগ আছে বলেই আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু দলীয় লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতি নিয়ে পড়ে থাকব না।’

আজ রোববার বিকেলে এক সভায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন ইয়াহ্ইয়া আখতার। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদে ‘নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কার’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের মুক্তচিন্তার সংগঠন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রচিন্তা।

সভায় নির্বাচনের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে নির্বাচনপ্রক্রিয়া নিয়ে আওয়ামী লীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যেত না। সেই থেকে নির্বাচন নিয়ে আমাদের দেশে যে দুর্নীতি, চুরি ও নানা ধরনের ফন্দিফিকির শুরু হয়েছে, তা পরবর্তী সামরিক-বেসামরিক সব আমলেই নানা কৌশলে চর্চিত হয়েছে। আমার মতে পঞ্চম, সপ্তম ও অষ্টম ছাড়া আর কোনো নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করেনি। শেষ তিন নির্বাচন তো আমাদের বিশ্বের দরবারে বেশ নেতিবাচক পরিচিতি দিয়েছে।’

সভায় উপস্থিত হয়ে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘আমাদের যে নির্বাচন ও সংবিধান, তা ব্রিটিশদের হাতে গড়া। তারা উপমহাদেশে এসেছিল ব্যবসা করার জন্য। সেই স্বার্থে তারা খাজনা আদায় বেশি লাভজনক মনে করে এসব অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং বিভিন্ন ধরনের আইন প্রণয়ন করে। এগুলো ছিল দমন–পীড়নের। ব্রিটিশরা গভর্নরকে সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা দিয়েছিল। তাদের অনুসরণে পাকিস্তানের সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে সবচেয়ে ক্ষমতাধর করা হয়েছে। তাদের সরাতে হলে তাই বারবার অভ্যুত্থান করতে হয়। সংবিধানে এই ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করার নিয়ম থাকতে হবে।’

হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘সরকার কী কী করতে পারবে না, সংবিধানে এসব নিয়ম থাকতে হবে। কারণ, রাষ্ট্রের কাছে অস্ত্র থাকে, জনগণের কাছে না। সেই সঙ্গে সংসদ সদস্যদের চুরি করার সব আইন বন্ধ করে দিতে হবে। তাহলে সে অন্যদেরও চুরি করতে দেবে না। কারণ, ফ্যাসিজম চর্চাকারী নিজে খুন করে এবং অন্যকেও খুন করতে প্ররোচিত করে। তার উদাহরণ আমরা গত ১৫ বছরে দেখেছি।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সায়মা আলম এ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রচিন্তার সহসভাপতি সাদিয়া আফরোজের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন ও দারুল উলুম আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মুহাম্মদ মুনির উদ্দিন।