ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচন

পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল, সাত্তার-জিয়াউলসহ বৈধ আটজন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে ১৩ জন প্রার্থীর মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ে পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। রোববার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র দাখিল করা ১৩ জন প্রার্থীর মধ্যে ৫ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। প্রার্থীদের হলফনামায় ত্রুটি ও ন্যূনতম ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরসহ সমর্থনসূচক তালিকায় গরমিল থাকায় তাঁদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। তবে বিএনপি থেকে সদ্য পদত্যাগী সাবেক সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াসহ আটজনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

আজ রোববার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহগীর আলম যাচাই-বাছাই করে পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। বাতিল হওয়া পাঁচজনের মধ্যে একজন দলীয় প্রার্থী আর চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী।

দলীয় প্রার্থী হলেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) রাজ্জাক হোসেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হলেন সরাইল উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আশরাফ উদ্দিন, শাহ মফিজ, সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম ও মোহন মিয়া। এর মধ্যে মোহন মিয়া (৬৪) গতকাল শনিবার বিকেলে মারা গেছেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, যাঁদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে, তাঁরা ইচ্ছা করলে তিন দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন। আপিল করে বৈধ হলে তিনিও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।

বৈধ ঘোষিত প্রার্থীরা হলেন বিএনপি থেকে সদ্য পদত্যাগী উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া, জাতীয় পার্টির দুবারের সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু আসিফ আহমেদ এবং জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবদুল হামিদ ভাসানী ও জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল ইসলাম।

সরেজমিন উপস্থিত থেকে দেখে গেছে, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় ১২ জনের মধ্যে ১১ জন প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। দুজন প্রার্থী অংশ নেননি। এর মধ্যে একজন প্রার্থী মারা গেছেন। অন্যজন বহুল আলোচিত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া।

মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়াদের মধ্যে আশরাফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সামান্য অজুহাতে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ১ শতাংশ ভোটারের তালিকার ১০ জনের মধ্যে দুজন ভোটারকে না পাওয়ায় আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। দুজন ভোটারের একজন আমার আপন ভাই শরিফ উদ্দিন। প্রার্থিতা ফিরে পেতে আমি আপিল করব।’

বৈধ হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন বলেন, ‘এখানে নির্বাচন উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। গত নির্বাচনে আমি জয়ের দ্বারপ্রান্তে ছিলাম। তবে এবার আমি আশাবাদী। কারণ, ভোটারদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অন্যান্য প্রার্থীর চেয়ে এখানে আমার দাবি অনেক বেশি। সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। অন্য দলের প্রার্থীরা মাথাব্যথার কারণ হবে না।’

জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা বলেন, ‘দুবারের সংসদ সদস্য ছিলাম। মানুষের কাছে আমার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিজয়ী হয়েছিলেন। ১১ ডিসেম্বর তিনি জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।