যেখানে-সেখানে থামতে পারছে না গাড়ি। দাঁড়াতে হচ্ছে নির্দিষ্ট স্থানে। উল্টো পথে চলার কোনো সুযোগ নেই। যেতে হচ্ছে নিয়ম মেনে। লাইন ভেঙে তাড়াহুড়া করে সামনে যাওয়ার তাড়া নেই চালকদেরও। পথচারীরাও রাস্তা পার হচ্ছেন শৃঙ্খলা মেনে। আর এসব কাজের তদারক করছিলেন শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাসেবকেরা।
আজ বুধবার দুপুরে এমন চিত্র দেখা চট্টগ্রাম নগরের ২ নম্বর গেট মোড়ে। এটি নগরের ব্যস্ততম মোড়গুলোর একটি। কর্মবিরতির কারণে দুই দিন ধরে নগরের মোড়গুলোয় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি নেই। এই অবস্থায় সড়কে যান চলাচলের ব্যবস্থাপনায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ থেকে মোড়গুলোয় আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। তাঁদের সহায়তা করছেন ছাত্রছাত্রীরা।
গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশ ত্যাগের পর চট্টগ্রামে গাড়ি চলাচল একেবারে কমে যায়। তবে আজ থেকে নগরে গাড়ির পরিমাণ বাড়তে শুরু করেছে। তবে এখনো স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম।
নগরের কাজীর দেউড়ি, প্রবর্তক মোড়, ২ নম্বর গেট, জিইসি মোড়, ওয়াসা মোড়, লালখান বাজার মোড়সহ নগরের প্রায় সব মোড়গুলোয় শিক্ষার্থীরা যান চলাচলে শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন।
এ রকম একজন সারোয়ার আলম। তিনি কমিউনিটি রেসকিউ স্টেশন নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য। আজ দুপুরে দায়িত্ব পালন করছিলেন নগরের ২ নম্বর গেট মোড়ে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের সংগঠনের প্রায় ৪০ জন সদস্য নগরের মোড়গুলোয় দায়িত্ব পালন করছেন। ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় তাঁরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে গাড়ি চলাচলে যাতে শৃঙ্খলা বজায় থাকে তার জন্য কাজ করছেন। তাঁরা পেশাদার না হলেও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজটি করে যাচ্ছেন। চালক, যাত্রী, পথচারী থেকে শুরু করে সবাই খুব সহযোগিতা করছেন।
২ নম্বর গেট মোড়ে দায়িত্বে ছিলেন আনসার সদস্য মো. মজিবর রহমান। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা দারুণভাবে সহায়তা করছেন। তাঁর নিজেরও ভালো লাগছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি কম
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে। হাতে গোনা ছাত্রছাত্রী হাজির হয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরের বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের (বাওয়া) ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আরিফ উল হাছান প্রথম আলোকে বলেন, স্কুল খুললেও শিক্ষার্থীরা আসছে না। প্রথম দিন কেউ আসেনি। দ্বিতীয় দিন আজ প্রাতঃশাখায় ৬০ থেকে ৭০ জন ছাত্রী উপস্থিত ছিল। যদিও প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী আছে এই পালায়। নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুর বিষয়টি অভিভাবকদের জানানো হয়েছে। এরপরও ছাত্রীরা স্কুলে আসছে না, তার কারণ জানা নেই। বিদ্যালয়ের এক অভিভাবক বলেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে মেয়েকে স্কুলে পাঠাবেন।