দিনভর অভিযানের পর সুপারশপের সব মালামাল জব্দ করে কার্যালয়ে নিয়ে যান জেলা কর, শুল্ক ও আবগারি বিভাগের কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার বিকেলে আখাউড়া স্থলবন্দরে
দিনভর অভিযানের পর সুপারশপের সব মালামাল জব্দ করে কার্যালয়ে নিয়ে যান জেলা কর, শুল্ক ও আবগারি বিভাগের কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার বিকেলে আখাউড়া স্থলবন্দরে

নিলামে কেনা কোটি টাকার মালামাল জব্দ করে নিয়ে গেল কাস্টমস

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে ‘ইন্দু বাংলা’ নামের একটি সুপারশপে অভিযান চালিয়ে প্রায় কোটি টাকার মালামাল জব্দ করে নিয়ে গেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। মালামালগুলো ৩১ মার্চ থেকে ২৯ মে পর্যন্ত আদালত ও শুল্ক গুদামের নিলামে অংশ নিয়ে কেনা হয়েছিল বলে দাবি সুপারশপের মালিকের।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জেলা কর, শুল্ক ও আবগারি বিভাগের উপকমিশনার আবু হানিফ মোহাম্মদ আবদুল আহাদের নেতৃত্বে একটি দল ওই অভিযান চালায়। বিকেলে সুপারশপের সব মালামাল জব্দ করে কাভার্ড ভ্যানে নিয়ে যাওয়া হয়।

ইন্দু বাংলা নামের ওই সুপারশপের মালিকের নাম ইয়াকুব হোসেন। তিনি আখাউড়া স্থলবন্দরের কালিকাপুর এলাকার ঈদন মিয়ার ছেলে। পাঁচবার নিলামে অংশ নিয়ে তিনি মালামালগুলো কিনেছিলেন বলে দাবি করেন।

সুপারশপের মালিক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বেলা ১১টার দিকে জেলা উপকমিশনারের নেতৃত্বে একটি দল ইন্দু বাংলা সুপারশপে আসে। এ সময় সুপারশপের মালিক ইয়াকুব হোসেন ও কর্মচারীদের মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয়। দোকানের কর্মীরা কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে সব মালামাল নিলামের মাধ্যমে কিনেছেন জানালে নথিপত্র দেখেন আবু হানিফ মোহাম্মদ আবদুল আহাদ। একপর্যায়ে মালামালের সব নথি, সবার মুঠোফোন, কম্পিউটার এবং দোকান ও গুদামে থাকা প্রায় কোটি টাকার মালামাল জব্দ করেন তিনি। বিকেলে সব মালামাল একটি বড় কাভার্ড ভ্যানে তুলে নিয়ে যান।

ইয়াকুব হোসেন বলেন, ‘আমার লাইসেন্স করা মেসার্স মিম এন্টারপ্রাইজ প্রতিষ্ঠানের নামে মোট ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার মাল কিনেছি। ৩৫ লাখ টাকার মালামাল বিক্রি করেছি। আমি নিয়মিত ভ্যাট ও ট্যাক্স দিয়ে যাচ্ছি।’

নিলামে মালামাল ক্রয়সংক্রান্ত কয়েকটি নথি অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানার একটি মালামালের নিলাম ডাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। নিলামে অংশ নিয়ে ইয়াকুব ১০ লাখ ৭০ হাজার টাকার মালামাল কেনেন। এর আগে ৩১ মার্চ বিজয়নগর থানার আরেকটি চালানের নিলাম থেকে তিনি ৬৩ লাখ মালামাল কেনেন। এ ছাড়া আখাউড়া শুল্ক গুদাম থেকে নিলামে অংশ নিয়ে ২৯ এপ্রিল ১৮ লাখ ২২ হাজার ৮০০, ২ মে ২৮ লাখ ৮৩ হাজার ও ২৯ মে ১৯ লাখ ৭৬ হাজার ২৫০ টাকার টাকার কসমেটিকসসহ বিভিন্ন মালামাল কেনেন।

অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-কর কমিশনার আবু হানিফ মোহাম্মদ আহাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে গুদামে তিনি (ইয়াকুব) মালামাল রেখেছেন, সেটি মুসক আইনে নিবন্ধিত নয়। আমরা মালামাল নিয়ে কার্যালয়ে পৌঁছেছি। এখনই কিছুই বলতে পারব না।’

আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, বৈধভাবে নিলামে কেনা মালামাল দোকান ও গুদাম থেকে কাস্টমসের লোকজন নিয়ে গেছেন। এমন হলে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে যাবে।