দিনাজপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি স্কুলছাত্র নিহত

মিনারুল ইসলাম (১৬)
ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুর সদর উপজেলায় ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার কমলপুর ইউনিয়নের দাইনুর সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মিনারুল ইসলাম (১৬) একই ইউনিয়নের খানপুর ভিতরপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। সে খানপুর উচ্চবিদ্যালয়েরে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি রংমিস্ত্রির জোগালির কাজ করত মিনারুল। চার ভাইবোনের মধ্যে সে ছিল তৃতীয়।

গতকাল রাতে সীমান্তে গোলাগুলির খবর পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় লোকজন সীমান্তের ৩১৪/সি এস পিলারের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে তেলিয়াপাড়া এলাকায় ভারতীয় আবাদি জমির ওপর মিনারুলের লাশ দেখতে পান। এ ঘটনায় কমলপুর ইউনিয়নের খানপুর এলাকার এমদাদুল (২৮) ও সাগর (২০) নামের দুই তরুণ নিখোঁজ আছে বলে দাবি করেছে তাঁদের পরিবার।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিনারুলসহ সাত-আটজন তরুণ গতকাল রাতে দাইনুর সীমান্ত এলাকায় গিয়েছিলেন। রাত ১০টার দিকে গুলি ছোড়ার শব্দ পান স্থানীয় লোকজন। সকালে ভারতীয় স্বজনদের কাছে সীমান্তে মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারেন এপারের বাসিন্দারা।

নিহত মিনারুলের মা মিনারা বেগম বলেন, গতকাল বিকেলে রঙের কাজ করতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় মিনারুল। রাত সাড়ে আটটার দিকে ফোনে কথা হয় ছেলের সঙ্গে। তখনো সে জানায়, রঙের কাজ শেষ হয়নি। আসতে দেরি হবে বলে মাকে জানায়। এরপর রাত ১০টায় আবারও ফোন করা হলে মিনারুলের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

আজ বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ভারতীয় তেলিয়াপাড়ায় আবাদি জমির আইলে মিনারুলের লাশ পড়ে আছে। এ পাশে বাংলাদেশ সীমান্তে উৎসুক মানুষের ভিড়।

ছেলের শোকে আহাজারি করছেন মিনারুল ইসলামের মা। আজ সকালে খানপুর ভিতরপাড়া এলাকায়

দাইনুর বিজিবি বিওপির নায়েক সুবেদার আকতার হোসেন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে বিএসএফের গুলিতে ওই কিশোর নিহত হয়েছে। এ বিষয়ে বিএসএফের কাছে তাঁরা চিঠি পাঠিয়েছেন। তবে পতাকা বৈঠক হবে না। মরদেহ ভারতের গঙ্গারামপুর থানায় নেওয়া হচ্ছে। সেখানে ময়নাতদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিজিবির উপস্থিতিতে বাংলাদেশ পুলিশের কাছে লাশ হস্তান্তর করবে ভারতীয় পুলিশ।