মাদারীপুরে ভুল চিকিৎসায় এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়েছেন রোগীর স্বজনেরা। আজ শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে শহরের পানিছত্র এলাকার কেআই হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত লাকী আক্তার (২৭) মাদারীপুরের শিবচর পৌরসভার খানকান্দি এলাকার সৈয়দ শামীমের স্ত্রী এবং শহরের চৌরাস্তা এলাকার বাদশা ব্যাপারীর মেয়ে। তিনি তিন সন্তানের জননী ছিলেন।
এদিকে ওই গৃহবধূর মৃত্যুর পর মাদারীপুর-শরীয়তপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্বজন ও এলাকাবাসী। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং হাসপাতালটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ দুপুর ১২টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় কেআই হাসপাতালে ভর্তি হন লাকী আক্তার। বেলা একটার দিকে টনসিলের অস্ত্রোপচারের জন্য তাঁকে হাসপাতালের দোতলায় অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়। সেখানে মিজানুর রহমান নামের এক চিকিৎসক সহযোগীদের নিয়ে অস্ত্রোপচার শুরু করেন। সেখানেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। কিন্তু মৃত্যুর বিষয়টি গোপন করে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হলে বিষয়টি ধরা পড়ে। তখন লাকীর স্বজনেরা ক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালটির বিভিন্ন কক্ষে ভাঙচুর চালান। এরপরই ঘটনার বিচার দাবিতে হাসপাতালের সামনের সড়কে বিক্ষোভ করেন স্বজনেরা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
লাকীর স্বামী সৈয়দ শামীম বলেন, অস্ত্রোপচারের চার ঘণ্টা পরে তাঁরা বলেন রোগীকে ঢাকায় নিতে হবে। এ কথা বলার আগেই লাকীর মৃত্যু হয়। ভুল চিকিৎসায় তাঁর স্ত্রী মারা গেছেন। তিনি চিকিৎসক ও হাসপাতালের মালিকের বিচার চেয়েছেন।
গৃহবধূর চাচা জাহান্দার আলী বলেন, ‘লাকীর তিনটি মেয়ে। ওরা আজ মা–হারা। টনসিলের অপারেশন করতে গিয়ে রোগী মারা যায়, এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
এদিকে ঘটনার পর থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসক পলাতক। অভিযোগের বিষয় তাঁদের মুঠোফোনে একাধিকভাবে ফোন দিলেও তাঁরা সাড়া দেননি।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সেলিম সরদার বলেন, হাসপাতালে ভাঙচুরের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। নিহত নারীর পরিবার থানায় অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।