সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের (শান্তিগঞ্জ ও জগন্নাথপুর) সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মান্নানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও তাঁর মুক্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত শান্তিগঞ্জ উপজেলার সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের শান্তিগঞ্জ চত্বর এলাকায় স্থানীয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় সড়কের উভয় দিকেই যানবাহন আটকা পড়ে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও চালকেরা।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শান্তিগঞ্জ এলাকার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার হন এম এ মান্নান। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন তিনি।
কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, এম এ মান্নান একজন শান্তিপ্রিয় মানুষ। কারও সঙ্গেই তাঁর কোনো বিরোধ নেই। তিনি থাকেন শান্তিগঞ্জে। অথচ সুনামগঞ্জ শহরের একটি ঘটনায় সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাঁকে মামলায় জড়ানো হয়েছে। তিনি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শুরু থেকেই শান্তিগঞ্জে শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলেন, সহযোগিতা করেছেন।
হাম্মাদ আহমেদ নামের একজন বলেন, এম এ মান্নান একজন স্পষ্টবাদী মানুষ। তিনি আন্দোলন চলাকালে একটি টেলিভিশনে ছাত্র-জনতার দাবির পক্ষে কথা বলেছেন। তিনি সরকারি টাকায় কেনা বুলেট ছাত্রদের ওপর ব্যবহারের বিচার চেয়েছেন। এখন তাঁকে হয়রানির উদ্দেশ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি অবিলম্বে তাঁর মুক্তি চান।
বেলা ১১টার পর শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এম এ মান্নানের মুক্তির দাবিতে পরবর্তী সময়ে আরও কর্মসূচি দেওয়া হবে।
এদিকে গ্রেপ্তারের পর আজ সকালে এম এ মান্নানকে সুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহান সাদিকের আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. মোশাহিদ আলী বলেন, এম এ মান্নানকে আদালতে হাজির করার পর তাঁকে কারা হাজতে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে তাঁর জামিন শুনানিসহ অন্যান্য কার্যক্রম হবে।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় ২ সেপ্টেম্বর দ্রুত বিচার আইনে করা মামলায় এম এ মান্নানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। সুনামগঞ্জ পৌর শহরে গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ওই মামলা হয়েছিল। সদর মডেল থানায় জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার বাসিন্দা হাফিজ আহমদ নামের এক ব্যক্তি দ্রুত বিচার আইনে মামলাটি করেন।
এই মামলায় এম এ মান্নানসহ ৯৯ জনকে আসামি করা হয়। বাদীর ভাই শিক্ষার্থী জহুর আহমদ হামলার ঘটনায় আহত হয়েছিলেন। মামলার আসামির তালিকায় ২ নম্বরে এম এ মান্নানের নাম আছে। প্রধান আসামি করা হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল হুদাকে।