রাজশাহী বাঘা উপজেলা চত্বরে স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দিন ও পৌর মেয়র আক্কাছ আলীর সমর্থকদের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাঘা উপজেলা চত্বরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় আহত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলামকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো পক্ষের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আজ সকালে উভয় পক্ষ পাশাপাশি এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে। একটি পক্ষের মানববন্ধনের আয়োজক ছিল বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগ শাখা। পৌর মেয়র আক্কাছ আলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে তাদের কর্মসূচি ছিল। অন্যদিকে অপর পক্ষ বাঘা উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখক সমিতির নামে ক্রেতাদের কাছ থেকে জোর করে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে। তাদের ব্যানারে আয়োজক হিসেবে লেখা ছিল ‘বাঘা উপজেলা সচেতন নাগরিকবৃন্দ’।
আজ সকালে উপজেলা দলিল লেখক সমিতির কমিটি বিলুপ্তি ও তাঁদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেন পৌরসভার মেয়র আক্কাছ আলী ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দিন লাবলুর সমর্থকেরা। সে অনুযায়ী পৌরসভা চত্বরে অবস্থান নেন তাঁরা।
অন্যদিকে সংসদ সদস্যের পক্ষটি অবস্থান নেয় সেখান থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে বঙ্গবন্ধু চত্বরে। একপর্যায়ে তারা উপজেলা চত্বর গেটের সামনে দাঁড়িয়ে পৌর মেয়র আক্কাছের দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে তাঁর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে পৌর মেয়র ও উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যানের সমর্থকেরাও বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বেলা ১১টা ২০ মিনিট পর্যন্ত তা চলে। দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া অন্তত ৪০ মিনিট চলে। এ সময় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। এ ছাড়া উভয় পক্ষের হাতে দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি চাপাতি ও পাইপ দেখা গেছে। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। তবে উপজেলাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এর আগে গত ১০ জুন বাঘা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হন। দলিল লেখক সমিতির সাবেক কমিটি ও বর্তমান কমিটির মধ্যে ওই মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে গত ২০ জুন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করে উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের পক্ষ।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. রফিকুল আলম বলেন, দুই পক্ষই উত্তেজিত হয়ে সংঘর্ষের জড়ায়। পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করেছে। এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে সবকিছু। এ ঘটনায় কতজন আহত হয়েছেন, পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন কি না, তা জানা যায়নি।