রকি ইসলাম
রকি ইসলাম

বিরামপুরে হত্যা মামলায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা গ্রেপ্তার

দিনাজপুরের বিরামপুরে হত্যা মামলায় রকি ইসলাম নামে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার বেলা দুইটার দিকে বিরামপুর পৌর শহরের পূর্ব জগন্নাথপুর মহল্লার বকুলতলা মোড় এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার রকি ওই এলাকার খায়রুল ইসলামের ছেলে এবং ছাত্রলীগের বিরামপুর সরকারি কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক। দুই বছর আগে উপজেলার সীমান্তবর্তী একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে রশিদুল ইসলাম (২৫) নামের এক তরুণকে হত্যার ঘটনায় গতকাল শুক্রবার দায়ের করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বিরামপুর থানার একটি হত্যা মামলার তদন্তের পর সংশ্লিষ্টতা থাকায় রকি ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আগামীকাল রোববার সকালে তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে। মামলায় এ পর্যন্ত চারজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

গতকাল শুক্রবার সকালে বিপ্লব আলম (৪৭) নামে বিএনপির এক কর্মী বাদী হয়ে রশিদুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় একটি মামলা করেন। বিপ্লব আলম উপজেলার ২ নম্বর কাটলা ইউনিয়নের উত্তর দাউদপুর গ্রামের বাসিন্দা। মামলায় দিনাজপুর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকসহ ১১৩ জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে উল্লেখ করা হয় ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর উপজেলার কাটলা ইউপি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নাজির হোসেনকে (আনারস) হারিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইউনুছ আলী (নৌকা) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে আনারস প্রতীকের পক্ষে নির্বাচন করেন দক্ষিণ কাটলার ধানহাটি এলাকার রশিদুল ইসলাম। পরে ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি বিকেলে কাটলা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুছ আলীর পক্ষে সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক এমপি শিবলী সাদিক। অনুষ্ঠান চলাকালে ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুছ আলী মঞ্চে থাকা শিবলী সাদিককে জানান, আনারস প্রতীকের কর্মী রশিদুল ইসলাম কাটলা বাজারে অবস্থান করছেন। তখন বাজার থেকে রশিদুলকে ধরে আনার নির্দেশ দেন শিবলী সাদিক। পরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ও মামলার ৩৩ জন আসামি সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে কাটলা বাজার থেকে রশিদুলকে ধরে এনে বাঁশের লাঠি ও লোহার রড দিয়ে পেটান। এতে ঘটনাস্থলেই রশিদুল মারা যান।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন উপজেলার কাটলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ইউনুছ আলী মণ্ডল, খানপুর ইউপির চেয়ারম্যান নিহার রঞ্জন পাহান, পলিপ্রয়াগপুর ইউপির চেয়ারম্যান রহমত আলী, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মেজবাউল ইসলাম মণ্ডল, নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের উপজেলা শাখার সভাপতি আবদুর রাজ্জাক, সাবেক পৌর মেয়র লিয়াকত আলী সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলজার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশিদ, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক খোরশেদ আলম প্রমুখ।