রায় ঘোষণার পর দণ্ড পাওয়া দুজনকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে
রায় ঘোষণার পর দণ্ড পাওয়া দুজনকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে

ভৈরবে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্বামীকে হত্যা, স্ত্রী ও প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে রেলওয়ের কর্মচারী মাহাবুবুর রহমানকে (৩৮) হত্যার ৪ বছর ১০ মাস পর তাঁর স্ত্রী রোকসানা আক্তার (৩৩) ও প্রেমিক মো. আসিফকে (২৪) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শারমিন হাসনাত পারভিন এ রায় ঘোষণা করেন। মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী রাখাল চন্দ্র দাস ও আসামিপক্ষের আইনজীবী অশোক ঘোষ রায়ের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

মাহাবুবুর রহমান রেলওয়ের তেজগাঁও এলাকায় এসএস ফিডার (লোকোশেড) পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের চন্ডিবের কামাল সরকার বাড়ির খলিলুর রহমানের ছেলে। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর রাতে নিজ বাড়িতে তিনি খুন হন। এ ঘটনায় তাঁর বড় ভাই হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে বলা হয়েছে, মাহাবুবুর-রোকসানা দম্পতির সংসারে তিন সন্তান। মাহাবুবুর সপ্তাহের পাঁচ দিন কর্মস্থল তেজগাঁওয়ে থাকলেও স্ত্রী-সন্তানেরা বাড়িতে থাকতেন। শুক্র ও শনিবার ভৈরবে যেতেন তিনি। মাহাবুবুরের প্রতিবেশী আসিফের সঙ্গে রোকসানার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর রাতে পায়েসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে মাহাবুবুরকে খাওয়ান রোকসানা। মাহাবুবুর ঘুমিয়ে পড়লে রোকসানা ঘরের দরজা খুলে দেন। আসিফ ঘরে ঢুকে ছুরি দিয়ে তাঁকে হত্যা করেন। পরে রোকসানা ডাকাতির গল্প সাজান। এ ঘটনায় পুলিশ আসিফসহ দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁরা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। মূলত আসিফের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন রোকসানা।

আদালতের রায়ে বলা হয়, নিহত মাহাবুবুরের তিনটি সন্তান আছে। সন্তানদের মায়া ত্যাগ করে জঘন্যতম হত্যার পরিকল্পনাকারী রোকসানা আক্তার আসিফকে নিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটান। এ জন্য দুজনকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো।

রায়ে খুশি বাদী হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, রোকসানা ও আসিফের পরকীয়ার কারণে তিনি তাঁর ভাইকে হারিয়েছেন। ভাইয়ের সন্তানেরা হারিয়েছে বাবা ও মাকে। এত বড় ক্ষতি পূরণের সুযোগ নেই। এরপরও সান্ত্বনা অপরাধীরা শাস্তি পেয়েছেন।