রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে নিহত বৃষ্টি খাতুনের লাশ কুষ্টিয়ায় দাফন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে খোকসা উপজেলার নিজ গ্রাম বনগ্রামের পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হয়। এর আগে তাঁর লাশ রাত আটটার দিকে নিজ বাড়িতে পৌঁছায়।
প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরুফা সুলতানা। তিনি বলেন, বৃষ্টির পরিবারের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখা হচ্ছিল। রাতে লাশ আসার পর তাঁর বাড়িতে আনা হয়। রাত ১০টায় দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
বৃষ্টি খাতুন ঢাকায় সাংবাদিকতা করতেন। তিনি সেখানে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে পরিচিত ছিলেন। তবে তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রে বৃষ্টি খাতুন নাম রয়েছে। তাঁর বাবার নাম সবুজ শেখ ও মা বিউটি খাতুন। তাঁরা তিন বোন। বৃষ্টি ছিলেন সবার বড়।
গত রোববার বিকেলে বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ বুঝে পায় তাঁর পরিবার। অগ্নিকাণ্ডের ১১ দিন পর গতকাল দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ তাঁর বাবা সবুজ শেখের কাছে হস্তান্তর করেন। গত রোববার সিআইডি জানিয়েছিল, অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে পরিচিত সাংবাদিকের সঙ্গে সবুজ শেখ ও বিউটি খাতুনের ডিএনএর মিল পাওয়া গেছে। অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে ঢাকার একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে কাজ করতেন এই তরুণী। মা–বাবার দেওয়া তাঁর নাম ছিল বৃষ্টি খাতুন।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুনে ৪৬ জন নিহত হন। তাঁদের ৪৪ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ও নাজমুল হোসেন নামের দুজনের মরদেহের একাধিক দাবিদার থাকায় তাঁদের ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাড়ির সামনে বৃষ্টির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় খোকসা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল আকতার, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আননূন যায়েদ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া লাশ দেখতে ও পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিতে তাঁর বাড়িতে যান ইউএনও ইরুফা সুলতানা।
জানাজা শুরুর আগে বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার মেয়ের লাশ নিতে যারা বিঘ্ন সৃষ্টি করেছিল, আল্লাহ এর বিচার করবেন। সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।’