চট্টগ্রামের পটিয়ায় বাস থেকে নামিয়ে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ৬৫ ভরি স্বর্ণ ও টাকা ছিনতাই হয়েছে। এ ঘটনায় গত বুধবার করা মামলায় পটিয়া পৌরসভা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মামুনসহ চারজনকে আসামি করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৭ আগস্ট দুপুরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া বাইপাস সড়কের কচুয়াই ফারুকীপাড়া স্থানে।
পটিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রহিম সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁরা যুবদলের নেতা–কর্মী। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
মোহাম্মদ মামুন ছাড়া মামলার অন্য আসামি হলেন তাঁর সহযোগী যুবদল কর্মী মো. মনির। এ ছাড়া আরও দুজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়। কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী রুবেল দাশ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, রুবেল দাশের ঈদগাঁও বাজারে রিদি গোল্ড ফ্যাশন নামের একটি স্বর্ণের দোকান রয়েছে। তিনি পুরোনো ২১ ক্যারেটের স্বর্ণের গয়না গলিয়ে নতুন গয়না তৈরি করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ আগস্ট সকালে তাঁদের দোকানের কারিগর রূপন দাশ (২১) ২১ ক্যারেটের ৬৫ ভরি স্বর্ণ নিয়ে নতুন ডাইস তৈরির জন্য পূরবী বাসে করে চট্টগ্রাম শহরে আসছিলেন। ওই দিন বেলা দেড়টার দিকে গাড়িটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া বাইপাস ফারুকীপাড়া পয়েন্ট অতিক্রম করার সময় পূরবী পরিবহনের সামনে একটি মোটরসাইকেলে দুজন এবং একটি নোহা গাড়িতে করে দুজনসহ চারজন অজ্ঞানামা লোক এসে বাসটির থামান।
বাসটি থামলে এ সময় তাঁরা চারজন বাসটিতে উঠে কারিগর রূপন দাশের আসনের সামনে গিয়ে বলতে থাকেন, তিনি ছাত্রলীগের কর্মী। চার থেকে পাঁচজনকে খুন করে পালিয়ে যাচ্ছেন। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে কিল–ঘুষি মারতে থাকেন। টেনেহিঁচড়ে বাস থেকে নামিয়ে ফেলেন। নোহা গাড়িতে তুলে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ফেলেন তাঁর। চলন্ত নোহাতে একপর্যায়ে তাঁরা গলায় ছুরি ধরে রূপন দাশের সঙ্গে থাকা ব্যাগে ২১ ক্যারেটের ৬৫ ভরি স্বর্ণ (যার মূল্য ৬৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা), একটি মুঠোফোন, দুই ভরি ওজনের রুপার ব্রেসলেট ও নগদ পাঁচ হাজার ৭০০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। পরে চোখ বাঁধা অবস্থায় রূপন দাশকে নোহা থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে পটিয়া পৌরসভা বিএনপির সদস্যসচিব গাজী আবু তাহের বলেন, তাঁদের (যুবদল নেতা–কর্মী) যদি কোনো অপকর্মে যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ দলের নাম ব্যবহার করে ছিনতাইসহ কোনো ধরনের অপকর্ম করলে, দলে তাঁদের স্থান নেই। ইতিমধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট ভাষায় বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের তা জানিয়ে দিয়েছেন।