রাজশাহীর বাঘায় সংঘর্ষের ঘটনায় আহত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুর পর বিক্ষোভ করছে আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ। আজ বুধবার বিকেলে পৌরসভা চত্বরে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে তারা বিক্ষোভ শুরু করে। এতে রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তখনো তারা বিক্ষোভ করছিল।
বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে এ কর্মসূচির ব্যানারে লেখা হয়েছে, ‘এই নৃশংসতার শেষ কোথায়, কুখ্যাত সন্ত্রাসীদের ফাঁসি চাই।’ ব্যানারে পৌর মেয়র আক্কাছ আলী, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মোক্কাদেসের ছবি রয়েছে। পাশাপাশি ব্যানারের আরেক পাশে আশরাফুল ইসলাম মারা যাওয়ার আগে তাঁর জখম হওয়ার রক্তাক্ত ছবি রয়েছে। বিক্ষোভকারীরা স্লোগানে বলছেন, তাঁদের নেতা হত্যার বিচার চান। আসামিদের গ্রেপ্তার চান। আসামিদের ফাঁসি চান।
পৌরসভায় যে সড়কে বিক্ষোভ করা হচ্ছে, তার দুই পাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বাঘা পৌরসভার অধিকাংশ দোকানপাটও বন্ধ হয়ে গেছে।
রাজশাহী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. রফিকুল আলম বলেন, তাঁরা সতর্ক অবস্থানে আছেন। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস সরকার বলেন, তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশের কাছে আছেন। তাঁরা লাশ নিয়ে বাঘায় যাবেন।
আজ বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশরাফুল ইসলাম মারা যান। হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফা কামাল এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার থেকে আশরাফুল ইসলাম হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। রোববার তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। তাঁর মস্তিষ্কে ইনফেকশন হয়েছিল। পরে অক্সিজেন লেভেল কমে যায়।’
গত শনিবার উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে থানার ওসিসহ অন্তত ৫০ নেতা-কর্মী আহত হন। সেদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষ চলাকালে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা চত্বরের ভেতর থেকে আশরাফুল ইসলামকে উদ্ধার করা হয়। তাঁর মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপ ছিল। পরে সেদিনই তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।