প্রায় সাড়ে ৬০০ স্বেচ্ছাসেবী ও কর্মী-সমর্থক নিয়ে পুরোনো খোয়াই নদের কচুরিপানা পরিষ্কারের কাজ শুরু করলেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক ওরফে ব্যারিস্টার সুমন। আজ শুক্রবার হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে ঢাকা থেকে এসে এ কাজে যোগ দিয়েছিলেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিনের ৬০০ সদস্য। আরও ছিল স্থানীয় কর্মী বাহিনী। এ পরিচ্ছন্নতা কাজের সময় চুনারুঘাট পৌরসভার মেয়র সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরাও অংশ নেন।
ব্যারিস্টার সুমন হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ঘোষণা দিয়েছিলেন, তাঁর এলাকার পুরোনো খোয়াই নদের কচুরিপানা অপসারণের মধ্য দিয়ে তাঁর সামাজিক কাজের সূচনা করবেন। এই প্রতিশ্রুতি থেকেই আজ সকাল নয়টা থেকে তাঁর নেতৃত্বে শুরু হয় এ কচুরিপানা পরিষ্কারের কাজ। যদিও এর আগেই চার দিন থেকে ব্যারিস্টার সুমনের স্থানীয় কর্মী বাহিনী অল্প অল্প করে নদীর কচুরিপানা পরিষ্কার করছিলেন। বিকেল চারটায় সাড়ে ৬০০ স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে কচুরিপানা পরিষ্কারের আজকের কাজ সমাপ্ত হয়। এরপর বিডি ক্লিনের সদস্যরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। অভিযানের প্রথম দিনই নদের প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকা কচুরিপানামুক্ত হয়।
বিডি ক্লিনের সদস্য পারভেজ আলম বলেন, ‘ব্যারিস্টার সুমনের আহ্বানে আমরা ৬০০ সদস্য কয়েকটি বাসে করে ঢাকা থেকে আজ চুনারুঘাটে এসে পৌঁছাই। স্বেচ্ছাশ্রমে এ কাজ করে আমাদের বেশ ভালো লাগছে। এ সামাজিক কর্মকাণ্ডে সবারই এগিয়ে আসা উচিত।’
সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সুমন প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেকেই কথার কথা সোনার বাংলার কথা বলেন। তবে আমি বাস্তবে প্রমাণ করে দেখাতে চাই, এটা বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত সোনার বাংলাদেশ। আমি নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকাবাসীকে কথা দিয়েছিলাম, এ পুরোনো খোয়াই নদ থেকে কচুরিপানা পরিষ্কার করে পুনরায় নৌকা চলাচলের ব্যবস্থা করব। এ কাজের প্রথম ধাপ আজ থেকে শুরু হলো। নদ পুরোপুরি কচুরিপানা মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এ কাজের ধারাবাহিকতা চলতেই থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘এ নদ পৌরসভার ভেতরে। কাজটি মূলত পৌরসভার দায়িত্ব। আমি তাদের সহযোগিতা করছি। তারাও আমার ডাকে সাড়া দিয়েছে। পাশাপাশি এ কাজে অংশ নেওয়া বিডি ক্লিনের সদস্যদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
চুনারুঘাট উপজেলা সদরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পুরোনো খোয়াই নদটি পারকুল এলাকা থেকে বাগবাড়ির মুখ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশ দীর্ঘদিন ধরে ময়লা-আবর্জনা ও কচুরিপানায় ভরে উঠেছে। এমনকি চুনারুঘাট শহরের পূর্ব-দক্ষিণ দিকের বাসিন্দারা তাঁদের বাসাবাড়ির ময়লা এখানে ফেলছেন এবং পয়োনিষ্কাশনের নালা এ নদীতে সংযুক্ত করেছেন। গৃহস্থালি বর্জ্যের দূষণে নদ যখন ভয়াবহ আকার ধারণ করে, ঠিক তখনই এ নদীকে উদ্ধারের কাজে হাত দিলেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য।
৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৪ আসনে সৈয়দ সায়েদুল হক (ব্যারিস্টার সুমন) প্রায় এক লাখ ভোটের ব্যবধানে তৎকালীন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীকে পরাজিত করেন। ব্যারিস্টার সুমন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীকে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৯ ভোট পেয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী টানা দুবারের সংসদ সদস্য মো. মাহবুব আলী নৌকা প্রতীকে ৬৯ হাজার ৫৪৩ ভোট পান।