পালানোর চেষ্টার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে যানটি। আজ দুপুরে কুমিরা ইউনিয়নের মগপুকুর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে
পালানোর চেষ্টার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে যানটি। আজ দুপুরে কুমিরা ইউনিয়নের মগপুকুর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে

হাইওয়ে পুলিশ দেখে পালানোর চেষ্টা, দুর্ঘটনায় অটোরিকশাচালক নিহত

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেপরোয়া গতির যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছিল হাইওয়ে পুলিশ। হাইওয়ে পুলিশ দেখে পালানোর চেষ্টার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে একটি সিএনজিচালিত যাত্রীবাহী অটোরিকশা। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার চালক নিহত এবং এক যাত্রী আহত হয়েছেন।

আজ বুধবার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের মগপুকুর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই অটোরিকশাচালকের নাম মেজবাহ উদ্দিন। তিনি বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের দক্ষিণ মাহমুদাবাদ গ্রামের তেলিপাড়া এলাকার বাসিন্দা। অন্যদিকে আহত যাত্রী মো. আরিফ কুমিরা ইউনিয়নের সোনারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

সরেজমিনে দেখা যায়, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটি মহাসড়কের পাশে দাঁড়ানো। স্থানীয় জনতা হাইওয়ে পুলিশের ওপর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশাটি সরিয়ে নিতে পুলিশের রেকার ভ্যান আসে। বিক্ষুব্ধ জনতা অটোরিকশা নিতে বাধা দেন। হাইওয়ে পুলিশের কর্তব্যরত সদস্যরা উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। পরে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি থানা–পুলিশকে জানায়। পরে থানা–পুলিশের দল এসে গাড়িটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

এদিকে উত্তেজিত জনতা অভিযোগ করে জানান, চেকপোস্ট বা কোনো সাইনবোর্ড না বসিয়ে ইচ্ছেমতো যানবাহন ধরছিল পুলিশ। ফলে হাইওয়ে পুলিশকে আচমকা দেখে সিএনজি অটোরিকশা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

উত্তেজিত জনতা অভিযোগ করে জানান, চেকপোস্ট বা কোনো সাইনবোর্ড না বসিয়ে ইচ্ছেমতো যানবাহন ধরছিল পুলিশ। ফলে হাইওয়ে পুলিশকে আচমকা দেখে সিএনজি অটোরিকশা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

হাইওয়ে পুলিশের অভিযানে নেতৃত্ব দেন বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোকন চন্দ্র ঘোষ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঈদ–পরবর্তী সময়ে মহাসড়ক অনেকটাই ফাঁকা। এ সময়ে মহাসড়কে অতিরিক্ত গতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। ঈদুল ফিতরের দিনও দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনা কমানোর জন্য বেপরোয়া গাড়ির বিরুদ্ধে স্পিডগান দিয়ে মামলা দিচ্ছিলেন তাঁরা। ওই দুর্ঘটনার আগ পর্যন্ত বেপরোয়া গতির পাঁচটিসহ মোট ৯টি মামলা দিয়েছেন তাঁরা।

ওসি আরও বলেন, অন্য গাড়ির সঙ্গে মহাসড়কে বেপরোয়া গতিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল কিছু অটোরিকশা। আজ বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে বেপরোয়া গতির একটি তেলবাহী লরিকে থামানোর সংকেত দেওয়া হয়। এতে যানটি তাৎক্ষণিকভাবে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। এর সামনেই ছিল দুটি অটোরিকশা। তেলবাহী লরির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছিল অটোরিকশা দুটি। তারা লরিটিকে থামানোর সংকেত দিলে বেপরোয়া গতিতে আসা সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুটি সড়কেই গাড়ি ঘুরিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ফলে একটি সিএনজি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয় লড়িটি। এতে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

পরে দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশার যাত্রী ও চালককে উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এ বিষয়ে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা নুর উদ্দিন রাশেদ প্রথম আলোকে বলেন, একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। অন্যজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তেলবাহী লরির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছিল অটোরিকশা দুটি। তারা লরিটিকে থামানোর সংকেত দিলে বেপরোয়া গতিতে আসা সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুটি সড়কেই গাড়ি ঘুরিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ফলে একটি সিএনজি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয় লড়িটি। এতে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি খোকন চন্দ্র ঘোষ

সীতাকুণ্ড থানার ওসি কামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, হাইওয়ে পুলিশের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করা হয়। হাইওয়ে পুলিশ অটোরিকশাটি উদ্ধার করে বার আউলিয়া থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।