বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকা থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থীদের আটক করে পুলিশ। আজ বিকেলে শহরের সাতমাথায়
বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকা থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থীদের আটক করে পুলিশ।  আজ বিকেলে শহরের সাতমাথায়

বগুড়ায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ সমাবেশ

বগুড়ায় পুলিশের বাধা ভেঙে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। শিক্ষার্থীদের গুলি করে হত্যা, গণগ্রেপ্তার ও সমন্বয়কদের আটকের প্রতিবাদে আজ সোমবার বিকেলে তাঁরা ওই বিক্ষোভ মিছিল করেন।

বিক্ষোভের আগে শহরের সাতমাথাসহ বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের রূপা আক্তারসহ রাজধানীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৮-১০ শিক্ষার্থীকে পুলিশ আটক করে।

আন্দোলনকারীরা শহরের জলেশ্বরীতলা কালীবাড়ি মন্দির মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক হয়ে জেলখানা লাবাম্বা মোড় থেকে আবারও কালীবাড়ি মোড়ে ফিরে এসে রহমানিয়া সিটির সামনে শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করেন। এ সময় শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক ছাড়াও রোমেনা আফাজ সড়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক ও জলেশ্বরীতলা নূর মসজিদ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

রহমানিয়া সিটির নিচে সমাবেশ করেন। এ সময় আন্দোলনকারীরা ‘জেগেছে যে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘তুমি কে, আমি কে সমন্বয়ক, সমন্বয়ক’ ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘শিক্ষাথীদের বুকে গুলি কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ স্লোগান দেন।

আজ বিকেল পৌনে পাঁচটায় প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী মিছিল, সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা তাঁদের ৯ দফা দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত অহিংস আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এ ছাড়া আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্যে আন্দোলনকারীরা রাজনৈতিক মতাদর্শের বাইরে ‘বগুড়া জেলা সমন্বয়ক কমিটি’ ঘোষণা করা হবে বলে জানান।

সমাবেশে রাজধানীর বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের (বিওপি) আল আরাফাত, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী বক্তব্য দেন। বিকেল থেকেই শহরে শিক্ষাথীদের মিছিল ঠেকাতে তৎপর ছিল পুলিশ। একসঙ্গে একাধিক শিক্ষার্থী দেখামাত্র তল্লাশি ও আটক করেছে।

পুলিশের তৎপরতা সতর্ক পাহারার মধ্যেই শহরের জলেশ্বরীতলা কালীবাড়ি মোড় থেকে মিছিল বের করা হয়। পুলিশ মিছিল ঠেকাতে তৎপর থাকলেও শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা ভেঙে মিছিল বের করেন। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়কে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দোকানপাট মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ সাধারণ পথচারী ও রিকশাচালকদের সেখান থেকে সরিয়ে দেন।

তবে পুলিশ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, মিছিলে বাধাও দেয়নি। সমাবেশে শেষে সেখানে উপস্থিত বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুর রশিদ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা মিছিল শেষে কাউকে হয়রানি ও গ্রেপ্তার না করার অনুরোধ জানান। পুলিশের এই কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করার পর শিক্ষার্থীরা সমাবেশস্থল ত্যাগ করেন।

তবে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত সাইয়ান ওলিউল্লাহ দাবি করেন, আজ কোনো শিক্ষার্থীকে পুলিশ আটক করেছে কি না, তা তিনি জানেন না।