গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি মো. নুরুল হকের (ভিপি নুর) ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খানের (মুক্তি) রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার বিকেলে জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পশুপতি বিশ্বাস এ আদেশ দেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় হাজিরা দিতে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে এসেছিলেন সহিদুর। হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে বিকেলে আদালত এলাকা থেকে তাঁকে আটক করে পুলিশ। পরে শুক্রবার বিকেলে নুরুল হকের ওপর হামলা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আজ ওই রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য ছিল।
আজ সহিদুরকে কারাগার থেকে আদালতে আনার পর আইনজীবীরা তাঁর জামিনের আবেদন করে আদালতকে বলেন, সহিদুর অসুস্থ। তাঁর চিকিৎসা চলছে। নুরুল হকের ওপর যখন হামলার ঘটনা ঘটে, তার অনেক আগে থেকেই সহিদুর কারাগারে ছিলেন।
পরে বিকেলে রিমান্ড ও জামিন উভয় আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত। টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক মিজানুর রহমান জানান, আদেশের পর সহিদুর রহমান খানকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানবীর আহাম্মেদ জানান, ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকসহ তাঁর দলের কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা আবদুল হামিদ খানের মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর কবরে শ্রদ্ধা জানাতে যান। এ সময় তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রায় তিন বছর পর গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান বাদী হয়ে ১ সেপ্টেম্বর সদর থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার বাদী শাকিল উজ্জামান বলেন, সাবেক মেয়র সহিদুরের নাম তিনি এজাহারে দেননি। মামলা তদন্তাধীন অবস্থায় আছে। পুলিশ কী কারণে গ্রেপ্তার করেছে, এ বিষয়ে তাঁর কিছুই জানা নেই। আইনত তদন্তাধীন বিষয়ে মন্তব্য করার সুযোগও নেই তাঁর। তিনি বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে পুলিশ প্রকৃত আসামিকে শনাক্ত করবে। তবে বিগত দিনে আওয়ামী লীগ অন্যায়ভাবে গণহারে মানুষকে নির্বিচারে যেভাবে সাজা দিয়েছে, তেমন যেন না হয়। হামলায় প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
সহিদুর রহমান খান টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খানের ছেলে এবং টাঙ্গাইল-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ভাই। আদালত সূত্র জানায়, ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় সহিদুর রহমান গত ২২ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালত থেকে স্থায়ী জামিন লাভ করেন। পরে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবার মামলার ধার্য তারিখে তিনি অ্যাম্বুলেন্সযোগে আদালতে এসেছিলেন।