দক্ষিণ আফ্রিকায় দুর্বৃত্তের গুলিতে দেলোয়ার হোসেন প্রধান (৪০) নামের এক বাংলাদেশি প্রবাসী নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত দেলোয়ারের পরিবার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে।
দেলোয়ার হোসেন কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের পূর্ব কাউয়াদি গ্রামের মৃত লাল মিয়া প্রধানের ছেলে। পাঁচ ভাই–বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট ছিলেন। প্রায় ১২ বছর আগে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। সেখানে চারটি দোকান চালাতেন।
আজ বুধবার বিকেলে দেলোয়ারের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তাঁর মা মমতাজ বেগম বসতঘরে বসে বিলাপ করছেন। ঘরের বাইরে বসে বিলাপ করছেন ফুফু সুফিয়া বেগম ও বড় বোন আয়েশা বেগম। তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন প্রতিবেশীরা।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে আয়েশা বেগম বলেন, গতকাল রাতে (দক্ষিণ আফ্রিকার সময় রাত ১০টা) দোকান বন্ধ করার কিছুক্ষণ আগে দেলোয়ারের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী শাবানা আক্তারের সবশেষ কথা হয়। তিনি স্বামীর খোঁজখবর নেন। তখন দেলোয়ার তাঁর স্ত্রীকে জানান, দোকান বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, রুটি কিনতে এক লোক এসেছেন, তাঁকে রুটি দিতে আবার দোকান খুলতে হবে। তিনি বলেন, এরপর ফোন রেখে দেলোয়ার দোকান খুলে ওই ক্রেতাকে রুটি এনে দেন। তখন ওই ক্রেতা রুটি হাতে নিয়েই দেলোয়ারকে গুলি করেন। হত্যার পর দোকানের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের মাধ্যমে দেলোয়ারের বড় ভাই আফ্রিকাপ্রবাসী মিজানুর রহমান বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ফুটেজে হত্যার দৃশ্য দেখতে পান। পরে বিষয়টি বাংলাদেশে ফোন করে জানান।
দেলোয়ারের চাচাতো ভাই আল আমিন প্রধান একসময় দক্ষিণ আফ্রিকায় দেলোয়ারের সঙ্গে থাকতেন। আল আমিন প্রধান বলেন, তাঁর চাচাতো ভাই দেলোয়ার বিএ পাস করার পর ১২ বছর আগে পরিবারের হাল ধরতে দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। স্বপ্ন ছিল একমাত্র ছেলেকে উচ্চশিক্ষিত করবেন, বাড়িতে ভবন বানাবেন। কিন্তু দেলোয়ার মারা যাওয়ায় তাঁদের মাথার ওপর থেকে বটগাছ সরে গেল। সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেল।
আল আমিন আরও বলেন, বাংলাদেশ সময় আজ বেলা দুইটার মধ্যে ময়নাতদন্ত শেষে দেলোয়ার হোসেনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। লাশ বাংলাদেশে আসতে অন্তত চার থেকে পাঁচ দিন সময় লাগবে।