বান্দরবানে ব্যাংক কর্মকর্তা উদ্ধার

‘এটি শুধু আমার স্বামীর নয়, একজন মানুষের জীবনের বিজয়’

অপহৃত ব্যাংক কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন
ছবি সংগৃহীত

বান্দরবানের রুমায় অপহৃত সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিন অক্ষত উদ্ধার হওয়ার পর তাঁর পরিবারের সদস্যরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে বান্দরবানের রুমা বাজার এলাকা থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। র‍্যাব বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে মধ্যস্থতা করে তাঁকে উদ্ধার করে।

মুক্তি পাওয়ার পর সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখার ব্যবস্থাপক মো. নেজাম উদ্দিন (মাঝে), পাশে তাঁর স্ত্রী ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আফজাল করিম

গত মঙ্গলবার রাতে নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে কেএনএফের অস্ত্রধারীরা। এ সময় সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখায় ভল্টে থাকা ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা লুট করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় তারা। তবে তারা পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র ও ৪১৫টি গুলি লুট করে নিয়ে যায়।

অপহৃত হওয়ার পর নিজাম উদ্দিনের স্বজনদের চরম আতঙ্কে দিন কেটেছে। ঘটনার পর তাঁরা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তাঁকে অক্ষত ফিরিয়ে আনার আবেদন জানিয়েছিলেন।

আজ শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে নিজাম উদ্দিনের স্ত্রীর মাইসুমা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন দিন রুদ্ধশ্বাস সময় কেটেছে। এটি শুধু আমার স্বামীর নয়, একজন মানুষের জীবনের বিজয়। এ রকম বিজয়ে কোনো ভাষা থাকে না। সৃষ্টিকর্তা আমাদের প্রার্থনা শুনেছেন; নিরপরাধ একজনকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এর চেয়ে জীবনের বিজয় আর কী হতে পারে! যেভাবেই হোক তিনি উদ্ধার হয়েছেন। এটা হলো সবচেয়ে বড় পাওনা।’ উদ্ধার তৎপরতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।

মাইসুমা ইসলাম জানান, গতকাল তাঁর স্বামীকে উদ্ধার করার পর র‍্যাবের কর্মকর্তারা তাঁকে ফোন দেন। পরে তিনি র‍্যাব কার্যালয় গিয়ে স্বামীর সঙ্গে দেখা করেন। রাতে তাঁর স্বামী র‍্যাবের কাছেই ছিলেন।

তিন দিনের দুঃসহ সময়ের কথা তুলে ধরে মাইসুমা ইসলাম বলেন, ‘অপহরণের সংবাদ পাওয়ার পর যেন মাথায় বজ্রপাত পড়ার মতো হয়েছিল। শ্বাসরোধ হয়ে যাচ্ছিল। আমার শাশুড়িরও একই অবস্থা হয়েছিল। তিন দিন ধরে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেছি। এ রকম দুর্বিসহ পরিস্থিতিতে সৃষ্টিকর্তা যেন কোনো পরিবারকে না দেন।’