মসজিদে ঢুকে ধর্ষণ মামলার সাক্ষীকে কোপানোর ঘটনায় মামলা হয়নি, অভিযুক্তরা অধরা

সাতক্ষীরা জেলার মানচিত্র
সাতক্ষীরা জেলার মানচিত্র

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় নামাজ চলাকালে মসজিদে ঢুকে ধর্ষণ মামলার এক সাক্ষীকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনার এক দিন পেরিয়ে গেলেও মামলা হয়নি। হামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কেউ ধরাও পড়েননি। তবে তাঁদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজ চলাকালে উপজেলার কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের একটি গ্রামের মসজিদে হামলার শিকার হন আমানুর রহমান (৫৯) নামের এক ব্যক্তি। তিনি একটি শিশু ধর্ষণ মামলার সাক্ষী। বর্তমানে তিনি কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শফিকুল ইসলাম বলেন, আহত আমানুর রহমানের মাথায় ছয়টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। রোগী আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থ।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আমানুর রহমান বলেন, একই এলাকার জিয়ারুল ইসলামের ছেলে জাহিদ হোসেন ও আবদুল খালেকের ছেলে রাকিব হোসেনের বিরুদ্ধে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ভুক্তভোগী শিশুর মায়ের করা মামলায় তাঁকে সাক্ষী করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মামলার আসামি জাহিদ হোসেনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ওই মামলায় সাক্ষী হওয়ায় পর থেকে আসামি পক্ষ তাঁকে নানাভাবে ভয়-ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছিল।

আমানুর বলেন, শুক্রবার সকালে হামলার পরিকল্পনা নিয়ে চড়াও হন আসামি জাহিদের বাবা জিয়ারুল ইসলাম ও চাচা আনারুল ইসলাম। কিন্তু ওই সময় পুলিশ থাকায় তাঁরা হামলা করতে পারেননি। পরে সুযোগ বুঝে দুপুরে জুমার নামাজের সময় মসজিদে ঢুকে তাঁরা দা ও লাঠি নিয়ে হামলা করেন। এ সময় তাঁর মাথায় কুপিয়ে জখম করা হয়। হামলাকারীরা চলে গেলে মুসল্লিরা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে আনারুল ইসলাম ও জিয়ারুল ইসলামের মুঠোফোন নম্বরে গতকাল ও আজ শনিবার একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু নম্বর বন্ধ থাকায় তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সাক্ষীর ওপর হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। শুক্রবার রাতে একাধিক স্থানে অভিযানে চালানো হয়েছে। আসামিদের আটক করা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, পুলিশের তৎপরতার কারণে তাঁরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। ওসি বলেন, ভুক্তভোগীদের মামলা করতে বলা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা কালক্ষেপণ করছেন।

আহত আমানুর রহমান বলেন, তিনি অসুস্থ বলে বাড়ির সবাই তাঁকে নিয়েই ব্যস্ত। তাই থানায় গিয়ে মামলা করার সুযোগ হয়নি। আজ শনিবার দুপুরের পর তিনি বাদী হয়ে থানায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন।