নাটোরের লালপুর উপজেলায় বিয়ের করার জন্য চাপ দেওয়ায় এক যুবক বিরক্ত হয়ে স্বাস্থ্যকর্মী তরুণীকে ছুরিকাঘাত ও গলা কেটে হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ শনিবার সকালে নাটোর জেলা পুলিশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায়।
নিহত ওই তরুণী লালপুর উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নার্স পদে কর্মরত ছিলেন। গতকাল শুক্রবার সকালে লালপুর উপজেলার গোপালপুর পৌরসভার মধুবাড়ি মহল্লার তোফাকাটা এলাকায় সড়কের পাশে ফসলি জমি থেকে অজ্ঞাতনামা তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় লাশের পাশ থেকে এক জোড়া জুতা ও একটি মানিব্যাগ জব্দ করা হয়। পরে ওই তরুণীর পরিচয় শনাক্ত হয়।
এ ঘটনায় নিহত তরুণীর বাবা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে লালপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে জাহিদ হাসান (২৯) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে। তাঁর বাড়ি বড়াইগ্রাম উপজেলার কামারদহ গ্রামে।
বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব ও লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জ্বল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীর লাশের সঙ্গে উদ্ধার করা আলামতের বিষয়ে স্বজন ও সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জাহিদ হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ওই তরুণীর লাশ উদ্ধারের ১২ ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম জানান, ওই তরুণীর লাশের পাশ থেকে আলামত হিসেবে এক জোড়া জুতা ও মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়। এসব আলামতের সূত্রে ধরে গতকাল রাতে বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মদপুর থেকে জাহিদ হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি পুলিশের কাছে তরুণীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, দীর্ঘদিন ধরে জাহিদ হাসানের সঙ্গে ওই তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। তরুণী তাঁকে বিয়ে করার জন্য চাপাচাপি করছিলেন। প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি প্রচার করার ভয় দেখিয়ে জাহিদের কাছ থেকে মাঝেমধ্যে টাকা হাতিয়ে নিতেন ওই তরুণী। এতে জাহিদ বিরক্ত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তরুণীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক জাহিদ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তোফাকাটা মোড়ে তরুণীকে ডেকে নেন। পরে সেখানে নির্জন স্থানে তরুণীকে ছুরিকাঘাত করে ও গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যান জাহিদ।