চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় শান্ত আহমেদ (১৮) নামে এক তরুণের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সদর থানার পুলিশ গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার জালশুকা গ্রামের হিমালয় ইটভাটার একটি পুকুর থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে।
নিহত শান্ত আহমেদ শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের ডিঙ্গেদহ পাওয়ার হাউজপাড়ার বাসিন্দা আইজাল হকের ছোট ছেলে। তিনি হিমালয় ইটভাটার শ্রমিক ছিলেন।
নিহত তরুণের পরিবারের সদস্যদের দাবি, ভাটাশ্রমিকদের মধ্যে পূর্ববিরোধের জেরে শান্তকে হত্যা করে পুকুরে ফেলা হয়েছে।
আইজাল হকের তিন ছেলের মধ্যে শান্ত আহমেদ সবচেয়ে ছোট। বড় ছেলে মিলন হোসেন (২২) ও মেজ ছেলে সবুজ আলী (২০) ডিঙ্গেদহ এলাকার এশিয়া বিস্কুট কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।
নিহত তরুণের ফুফা জালশুকা গ্রামের বাসিন্দা আবু তাহের বলেন, শান্তর সঙ্গে ইটভাটার কয়েকজন শ্রমিকের কয়েক দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। তিনি ইটভাটায় কাজ করার পাশাপাশি জালশুকা গ্রামের মসজিদে নিয়মিত নামাজ পড়েন। সোমবার আসর ও মাগরিবের নামাজ পড়তে না আসায় আবু তাহের শান্তর খোঁজ করতে থাকেন এবং তাঁর মা–বাবাকে জানান। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা ভাটায় কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান যে শান্ত ভাটায় নেই। বাইরে খোঁজ করতে তাঁরা পরামর্শ দেন।
আবু তাহের বলেন, ‘শ্রমিকদের কথার ভঙ্গিতে সন্দেহ দেখা দিলে আমরা ভাটার ভেতরে খোঁজ নিতে যাই। তখন বেশ কয়েকজন শ্রমিক আমাদের বাধা দেন। তাঁদের বাধা উপেক্ষা করে ভেতরে গিয়ে দেখি একটি পুকুরে শান্তর মরদেহ ভাসছে। এরপর সেখান থেকে পুলিশকে জানিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।’
আবু তাহের দাবি করেন, শান্ত সাঁতার জানতেন। পুকুরে ডুবে তাঁর মারা যাওয়ার কথা না। তাই ধারণা করা হচ্ছে, পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত শংকরচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মহিউল আলম প্রথম আলোকে বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছে শান্তকে হত্যা করে পুকুরে ফেলা হয়েছে।
সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান গতকাল রাতে ঘটনাস্থল থেকে প্রথম আলোকে বলেন, নিহত তরুণের স্বজনদের অভিযোগগুলো গুরুত্ব দিয়ে নোট করা হয়েছে। লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।