বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ চকবাজার এলাকায় আজ গণসংযোগ করেন
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ চকবাজার এলাকায় আজ গণসংযোগ করেন

বরিশাল সিটি নির্বাচন

আনুষ্ঠানিক গণসংযোগে খায়ের আবদুল্লাহ, সঙ্গে নেই স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত আজ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে গণসংযোগ শুরু করেছেন। এ সময় তিনি নগরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে নগরবাসীর সঙ্গে হাত মেলান ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

তাঁর পাশে নগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আফজালুল করিম ছাড়া নগর ও জেলা আওয়ামী লীগের অন্য নেতাদের দেখা যায়নি।

আবুল খায়ের আবদুল্লাহ আজ সকালে বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। সেখানে জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি। এরপর তিনি শহরের চকবাজার এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় পথচারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি। গণসংযোগের সময় তিনি নগরবাসীর উদ্দেশে বলেন, জয়ী হলে অবহেলিত, উন্নয়ন স্থবির বরিশাল নগরকে আধুনিক এবং উন্নত নাগরিক সুবিধার একটি নগরে পরিণত করবেন। একই সঙ্গে নগরভবনকে একটি জনবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলবেন। নাগরিকদের মর্যাদা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়ার কথাও জানান তিনি।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বোন আমেনা বেগমের ছোট ছেলে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ। তিনি বর্ষীয়ান নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছোট ভাই এবং বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ছোট চাচা।

বরিশালে মেয়র পদে এবারও বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে একক প্রার্থী হিসেবে প্রস্তাব করে কেন্দ্রে নাম পাঠিয়েছিল মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ। কিন্তু মনোনয়ন দেওয়া হয় আবুল খায়ের আবদুল্লাহকে। গত ১৫ এপ্রিল আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ড এই মনোনয়ন ঘোষণার পর সাদিক আবদুল্লাহর সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ ও হতাশ হন। মনোনয়নকে কেন্দ্র করে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ও তাঁর চাচা দলীয় প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহর সমর্থকদের মধ্যে ভেতরে-ভেতরে ক্ষোভ ও বিরোধ চললেও তা প্রকাশ্যে আসে গতকাল সোমবার মে দিবস উপলক্ষে একই স্থানে পৃথক মঞ্চ করে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করার মধ্য দিয়ে।

গণসংযোগের সময় আবুল খায়ের আবদুল্লাহর পাশে নগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আফজালুল করিম ছাড়া নগর ও জেলা আওয়ামী লীগের অন্য নেতাদের দেখা যায়নি

আবুল খায়ের আবদুল্লাহ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বরিশালে আসেন ১৮ এপ্রিল। ওই দিন তাঁকে দেওয়া সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর ও জেলা সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস। তাঁরা ওই দিন দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু দুটি সভায় উপস্থিত হয়ে বক্তৃতা দেওয়া ছাড়া দলীয় প্রার্থীর পাশে তাঁদের আর দেখা যায়নি। নগরের ৩০টি ওয়ার্ডের দলীয় নেতা-কর্মীরাও আবুল খায়েরের পক্ষে মাঠে নামেননি।

আবুল খায়ের আবদুল্লাহর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ও দপ্তর সেলের প্রধান লস্কর নুরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকালে দলীয় প্রার্থীর গণসংযোগ শুরু হয়েছে। বিকেলে তিনি মহানগর ওলামা লীগের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। রাতে তিনি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে খেয়াঘাট পর্যন্ত গণসংযোগ, স্পিডবোট ঘাট এলাকায় কর্মী সমাবেশ এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দেবেন।

এদিকে বরিশালে আগেই নির্বাচনী মাঠে গণসংযোগ করছেন জাপার প্রার্থী ইকবাল হোসেন। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি ফয়জুল করিম এখনো মাঠে নামেননি। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণের মতবিনিময়সহ নানা তৎপরতা চালাচ্ছেন বিএনপির প্রয়াত মেয়র আহসান হাবিব কামালের ছেলে কামরুল আহসান ওরফে রুপণ।