শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের
শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের

জয়পুরহাটে শেখ হাসিনা-ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা

জয়পুরহাটে মেহেদী নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ২১৭ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিহত মেহেদীর স্ত্রী জেসমিন আকতার বাদী হয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করলে বিচারক আতিকুর রহমান মামলাটি নথিভুক্ত করতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।

জয়পুরহাট আদালত পুলিশের পরির্দশক আবু বকর সিদ্দিক প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এ নিয়ে জয়পুরহাটে শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হলো। দুটি মামলায় শেখ হাসিনাকে নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার বাদী জেসমিন আকতার (২৮) সদর উপজেলার তেঘরবিশা গ্রামের বাসিন্দা। ৫ আগস্ট বেলা ৩টার দিকে সদর থানার সামনে পাকা সড়কে তাঁর স্বামী মেহেদী গুলিতে নিহত হন। ১৮ আগস্ট কলেজছাত্র নজিবুল সরকার (১৮) গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় শেখ হাসিনা, কাদেরসহ ১২৮ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়।

সদর থানার ওসি হুমায়ন কবির প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের নির্দেশে মেহেদী হত্যা মামলাটি থানায় নথিভুক্ত করা হয়েছে।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, জয়পুরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রকেট, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, কালাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিনফুজুর রহমান মিলন, সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান, ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দুলাল মিয়া সরদার, আক্কেলপুরের সাবেক চেয়ারম্যান মোকছেদ আলী মন্ডল, পাঁচবিবি পৌরসভার সাবেক মেয়র হাবিবুর রহমান, সাবেক হুইপ স্বপনের ছোট ভাই আবু সাঈদ আল মাহবুব, ক্ষেতলাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুজ্জামান তালুকদার, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাকারিয়া হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক।

আদালতে মামলার আর্জিতে বলা হয়, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর সারা দেশে উত্তেজিত জনতা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্থাপনায় আক্রমণ করে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। দেশের অন্যান্য স্থানের মতো জয়পুরহাটেও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে অবস্থানরত নেতা–কর্মীদের উত্তেজিত জনতা ধাওয়া করে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অস্ত্রশস্ত্র, ককটেল, লাঠি, হাসুয়া, ইট-পাথরসহ সদর থানার ভেতরে প্রবেশ করে অবস্থান নেন। ওই দিন বেলা তিনটার দিকে উত্তেজিত জনতা থানার বাইরে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। সেনাবাহিনী পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। তবে উত্তেজিত জনতা একপর্যায়ে থানার পূর্ব ও পশ্চিম দেয়াল ভেঙে ভেতরে ঢুকলে থানায় অবস্থানরত আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীরা ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি ছুড়তে থাকেন এবং মোটরসাইকেল গ্যারেজ, থানা ভবন ও গোলঘরে অগ্নিসংযোগ করেন। আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীদের ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলিতে মেহেদী গুলিবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।