পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক সমর্থককে কুপিয়ে জখম করেছেন বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার তুষখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তির নাম হারুন অর রশিদ হাওলাদার (৫৫)। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হারুন অর রশিদ হাওলাদার তুষখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তাঁর বাড়ি ওই ইউনিয়নের ছোট মাছুয়া গ্রামে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও চারবারের সংসদ সদস্য মো. রুস্তম আলী ফরাজীর পক্ষে কাজ করেন। রুস্তম আলী ফরাজী জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি এবার জাতীয় পার্টির মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হারুন অর রশিদ হাওলাদার বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে তুষখালী বাজারে যাওয়ার পথে বিজয়ী শামীম শাহনেওয়াজের সমর্থক বাবু, আল আমিন, রনিসহ কয়েকজন তাঁর ওপর হামলা করেন। তাঁরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও হাত-পায়ে পিটিয়ে হারুনকে গুরুতর জখম করেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা হারুন অর রশিদ হাওলাদারের ওপর হামলার ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পিরোজপুর-৩ আাসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য শামীম শাহনেওয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ঘটনায় কারা জড়িত বা কী ঘটেছে আমি কিছুই জানি না। খোঁজ নিয়ে বলতে পারব।’
এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম শাহনেওয়াজ কলার ছড়ি প্রতীকে ৬২ হাজার ১৩০ ভোট পেয়ে পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রুস্তম আলী ফরাজী ঈগল প্রতীকে ৪৭ হাজার ৬২১ ভোট পেয়েছেন। এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও দলের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাশরেকুল আজম লাঙ্গল প্রতীকে ৬৬০ ভোট পেয়ে জামাতন হারিয়েছেন। এ আসনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির আসন সমঝোতার কারণে নৌকার কোনো প্রার্থী ছিল না।
বিজয়ী শামীম শাহনেওয়াজ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমানের বড় ভাই। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। আশরাফুর রহমান এ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছিলেন। পরে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে আসন ছেড়ে দেওয়া হলে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। অপর দিকে রুস্তম আলী ফরাজী এ আসনে ১৯৯৬, ২০০১, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর মধ্যে প্রথমবার তিনি জাতীয় পার্টি থেকে, দ্বিতীয়বার বিএনপির প্রার্থী হিসেবে, তৃতীয়বার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং চতুর্থবার আবারও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে তিনি সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন।