নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে মাওলানা মামুনুল হক–কাণ্ডে গ্রেপ্তার হেফাজতে ইসলামের কর্মী মাওলানা ইকবাল হোসেনের মৃত্যুর তিন বছর পর থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় নারায়ণগঞ্জের সাবেক দুই সংসদ (এমপি) সদস্য, সাবেক পুলিশ সুপারসহ ১২৮ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার সোনারগাঁ থানায় হেফাজতে ইসলামের সদস্য মাওলানা শাজাহান শিবলী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল বারী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম ওরফে বাবু, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল-কায়সার, নারায়ণগঞ্জ জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম, রাজধানীর মতিঝিল জোনের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) আতিকুল ইসলাম, সোনারগাঁ উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ ডিবির সাবেক ওসি মো. এনামুল কবির ও সোনারগাঁ থানার সাবেক ওসি মো. হাফিজুর রহমান।
এজাহারে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় হেফাজতে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক তাঁর স্ত্রীসহ ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল রাতে সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে অবকাশযাপনের জন্য আসেন। ওই সময় দুই সাবেক সংসদ সদস্যের ষড়যন্ত্রে পুলিশের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে এজাহার নামীয় ১২৮ জন আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আরও অন্তত দেড় শ আসামি মামুনুল হককে স্ত্রীসহ হেনস্তা করে রিসোর্ট থেকে বের করে দেন। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে সোনারগাঁয়ের হেফাজত কর্মী মাওলানা ইকবাল হোসেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় মামুনুল হককে হেনস্তার জোরালো প্রতিবাদ করেন।
আসামিরা তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে কিল–ঘুষিসহ লোহার রড দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। আহত অবস্থায় তাঁকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে আদালতে পাঠান। ওই সময় পুলিশ তাঁকে রিমান্ডের নামে নির্যাতন করে। নির্যাতনে ইকবাল অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল মাওলানা ইকবাল মারা যান।
এজাহারে বলা হয়েছে, ওই সময় বিরূপ পরিস্থিতির কারণে মাওলানা ইকবাল হোসেনের পরিবার মামলা করতে সাহস পাননি। বর্তমানে পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় তাঁর পরিবারের পক্ষে মামলা করা হলো।