পূজার ছুটিতে অনেকেই বাড়ি ফেরায় গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রায় যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। এ কারণে যানবাহন চলছে থেমে থেমে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে
পূজার ছুটিতে অনেকেই বাড়ি ফেরায় গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রায় যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। এ কারণে যানবাহন চলছে থেমে থেমে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে

গাজীপুরের চন্দ্রায় মহাসড়কে যানবাহনের চাপ, ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ

পূজার ছুটিতে অনেকেই বাড়িতে যাওয়ায় গাজীপুরের মহাসড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। রাজধানীর অন্যতম প্রবেশমুখ গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এলাকায় আজ শুক্রবার সকাল থেকে বাড়ি ফিরতে ব্যাপক ভিড় করেছেন যাত্রীরা। তবে পর্যাপ্ত গাড়ি না পেয়ে তাঁদের অনেককেই দীর্ঘ সময় স্টেশনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। গরম ও বৃষ্টিতে নাকাল হচ্ছে নারী ও শিশু যাত্রীরা। তবে এসবের মধ্যেও সড়ক শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের দেখা মেলেনি।

চন্দ্রা মোড়ে অন্য দিনের তুলনায় যানবাহনের জটলা বেশি থাকায় থেমে থেমে চলছে গাড়ি। সুযোগ বুঝে পরিবহনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।

হাইওয়ে পুলিশ ও যাত্রীরা জানান, চার দিনের ছুটি পাওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শত শত মানুষ গ্রামের বাড়িতে ছুটছেন। এ কারণে চাপ পড়ছে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড়সহ কয়েকটি এলাকায়। কোথাও কোথাও দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টিও হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে চন্দ্রায় যানজটের কারণে এক কিলোমিটার পথ যেতে সময় লেগেছে প্রায় দুই ঘণ্টা। আর পুলিশ না থাকায় এই দুর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।

আজ সকালে মুঠোফোনে কথা হয় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার এলাকার বাসিন্দা মো. রেজাউলের সঙ্গে। তিনি বলেন, গতকাল রাত ১০টার দিকে গাজীপুর শহর থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। চান্দনা চৌরাস্তা থেকে সফিপুর পর্যন্ত কোনো যানজট ছিল না। তবে আনসার একাডেমি থেকে চন্দ্রা ত্রিমোড় যেতে সময় লেগেছে প্রায় দুই ঘণ্টা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। বাসেও স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ভাড়া বেশি নিচ্ছে।
আজ সকাল নয়টা থেকে দশটা পর্যন্ত চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, হাজার হাজার ঘরমুখী যাত্রীর ভিড়। হিন্দুধর্মের মানুষের সঙ্গে ছুটি পেয়ে অন্যান্য ধর্মের মানুষ ছুটছেন গ্রামে। অতিরিক্ত মানুষের চাপে পরিবহনগুলো অন্যান্য দিনের তুলনায় অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। ঘরমুখী মানুষ বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই গ্রামে ফিরছেন। তবে মহাসড়কের কোথাও পুলিশ সদস্যদের দেখা যায়নি।

পর্যাপ্ত গাড়ি না পেয়ে তাঁদের অনেককেই দীর্ঘ সময় স্টেশনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। গরম ও বৃষ্টিতে নাকাল হচ্ছে নারী ও শিশু যাত্রীরা। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে গাজীপুরের চন্দ্রা মোড়ে

অঞ্জলি রানি দাস নামের একজন যাত্রী বলেন, ‘পূজার ছুটিতে গ্রামের বাড়ি নাটোর যাওয়ার জন্য বের হয়েছি। অনেক মানুষের ভিড়। সিট পাওয়া যাচ্ছে না। দাঁড়িয়ে লোক নিচ্ছে, তা–ও ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে। এটি দেখার মতো কেউ নেই, রাস্তায় কোনো পুলিশও নেই।’

আলফাজ হোসেন নামের একজন যাত্রী বলেন, ‘দীর্ঘক্ষণ ধরে চন্দ্রায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি। ঈদের ছুটির মতো মানুষ বাড়ির দিকে ছুটছে। হাজার হাজার যাত্রী। ৩০০ টাকার ভাড়া ৬০০-৭০০ করে নিচ্ছে, তা–ও সিট পাওয়া যাচ্ছে না।’

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর এলাকার গোপাল সাহা বলেন, পূজা উপলক্ষে ছুটিতে সবাই গ্রামে যাচ্ছেন। অনেকেই গার্মেন্টস ছুটি হলে দুপুরের পর রওনা দেবেন। তবে রাস্তায় কোনো পুলিশ নেই। পুলিশ থাকলে শৃঙ্খলা থাকত সড়কে।

গুগল স্যাটেলাইট মানচিত্রে চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের যানজটের চিত্র

নাওজোড় হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইজ উদ্দিন বলেন, যাত্রী ও যানবাহনের চাপ অনেক বেড়েছে। পুলিশ আছে বেশ কিছু জায়গায়। অতিরিক্ত চাপে থাকায় অনেক জায়গায় যেতে পারছে না। অতিরিক্ত ভাড়া যেন না নিতে পারে, সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

ওসি রইজ উদ্দিন আরও বলেন, ‘স্বাধীনতা পেয়ে মানুষ যা ইচ্ছা তাই করছে। কেউ কোনো নিয়ম মানছে না। কেউ কোনো কথাও শোনে না। শুক্রবার তাই যাইনি। বাসাতেই আছি।’