চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ উপনির্বাচন

মোহাম্মদ আলী মাঠে, চিন্তিত নেতা-কর্মীরা

এ আসনে আওয়ামী লীগের দুজন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। দলের নেতা-কর্মীরা মোহাম্মদ আলীকেই শক্তিশালী প্রার্থী মনে করছেন। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মানচিত্র
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মানচিত্র

উচ্চ আদালতের আদেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট) আসনে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ মোহাম্মদ আলী সরকার প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ায় দলের নেতা-কর্মীরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তাঁরা মনে করছেন, এতে কিছুটা বদলাবে ভোটের সমীকরণ। সহজে নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হবে না।

এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মু. জিয়াউর রহমান। এ আসনে মোট পাঁচজন ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। তাঁদের মধ্যে দুজন আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে মোহাম্মদ আলী সরকার রাজশাহী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। আরেকজন হলেন গোমস্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য খুরশিদ আলম।

 উপজেলা নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, সমর্থনসূচক ১ শতাংশ ভোটারের তালিকায় গরমিল থাকায় মোহাম্মদ আলী সরকারের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এরপর তিনি নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করলে সেখানেও তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। এরপর তিনি উচ্চ আদালতে যান। সেখান থেকে গত মঙ্গলবার এক আদেশে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান।

নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের ফুলকুঁড়ি মোড়ে এক চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন আওয়ামী লীগের মাঠপর্যায়ের কয়েকজন কর্মী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোহাম্মদ আলী সরকার টাকাওয়ালা লোক। তাঁর মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশন বাতিল করায় আমাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছিল। কিন্তু তিনি আবার প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ায় কিছুটা চিন্তায় পড়েছি। আমাদের এলাকায় দুটি কেন্দ্রে (বরেন্দা লালজাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কামার জগদইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) নৌকাই বেশি ভোট পাবে। কিন্তু অন্য কেন্দ্রগুলোতে একটু সমস্যা হতে পারে। আমাদের একটু বেশি খাটতে হবে।’

নাচোল সদরের বটতলা মোড়ে দলের কর্মীরা বলেন, এ আসনে আওয়ামী লীগের দুজন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। তাঁরা খুরশিদ আলমকে সেভাবে হুমকি মনে করছেন না। তবে মোহাম্মদ আলী সরকার শক্তিশালী প্রার্থী। তিনি মাঠে থাকলে দলীয় প্রার্থীকে জয় পেতে কষ্ট করতে হবে।

‘বিদ্রোহী’ দুজনের মধ্যে মোহাম্মদ আলীই বেশি শক্তিশালী এমনটা ভাবছেন নাচোল উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল হোসেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দলের মধ্যে মুনাফেকি না হলে নৌকার ক্ষতি কেউ করতে পারবে না। তবে মোহাম্মদ আলী সরকার প্রার্থী হওয়ায় আমাদের একটু বেশি পরিশ্রম করতে হবে।’ 

নাচোলের এক নেতা বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের ভোটাররা যদি নৌকাকে ডোবাতে ভোট দিতে যান, তবে তাঁদের বেশির ভাগ ভোট মোহাম্মদ আলী সরকারের পক্ষে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে নৌকার ক্ষতিই হবে। মোহাম্মদ আলী সরকার প্রার্থী থেকে যাওয়ায় আওয়ামী লীগের চাপ বেড়ে গেছে। 

তবে এটা মানতে রাজি নন প্রার্থী জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে তাঁর বিপক্ষে একটি গ্রুপ আছে। তাদেরই কিছু নিচের পর্যায়ের কর্মী-সমর্থকেরা এ কথা প্রচার করছে। আওয়ামী লীগের মূল স্রোত তাঁর পক্ষে। সাধারণ ভোটারও তাঁর পক্ষে। বিপক্ষ দলের টাকা থাকতে পারে, কিন্তু টাকা দিয়ে সাধারণ ভোটারদের কিনতে পারা যাবে না। নৌকার বিজয় আনতে একটু পরিশ্রম বাড়বে, এর বেশি কিছু নয়। আর তাঁর যা কিছু অর্জন, তা পরিশ্রমের জোরেই।

মোহাম্মদ আলী সরকারের মুঠোফোনে কল করলে তিনি বলেন, ‘আমি এখন কিছুই বলব না’।