নাটোরের লালপুর উপজেলায় ‘বোমা কালাম’ হিসেবে পরিচিত আবুল কালামকে (৫০) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আজ শনিবার ভোরে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের একটি পুকুর পাড় থেকে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করেছে।
এ ঘটনায় আবুল কালামের দ্বিতীয় স্ত্রী আরজিনা খাতুন (৩৫), সৎ ছেলে (১৬), আরজিনার বাবা জহিম উদ্দিন (৬০) ও মা মোছা. জালেমাকে (৫৫) আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেছেন আবুল কালামের ছোট ভাই সহিদুজ্জামান সালাম। পুলিশ ইতিমধ্যে আরজিনার আগের পক্ষের কিশোর ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে।
লালপুর থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আবুল কালাম তাঁর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর ১০ বছর আগে লালপুরের বড় বাদকয়া গ্রামের আরজিনা খাতুনকে বিয়ে করে সেখানেই বসবাস শুরু করেন। তাঁদের সংসারে ৯ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কালামের ছোট ভাই সহিদুজ্জামান সালাম ও চাচাতো ভাই মাসুদ রানা প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পান, আবুল কালামকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁরা ছুটে এসে বাড়ির পেছনে ছোপ ছোপ রক্ত, ভাইয়ের ব্যবহৃত শীতের টুপি ও স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখলেও ভাইকে খুঁজে পাননি। পরে লালপুর থানায় গিয়ে সহিদুজ্জামান চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলার আবেদন করেন।
পুলিশ তাৎক্ষণিক আরজিনার কিশোর ছেলেকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে পারিবারিক কলহের কারণে মায়ের সঙ্গে মিলে সৎ বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তার দেখানো মতে পাশের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের হাজী মজনুর পুকুর পাড় থেকে আবুল কালামের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এলাকাবাসী জানান, আবুল কালাম বোমা তৈরি, বিক্রিসহ চুরি, ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। প্রায় ২০ বছর আগে একবার তাঁর বাড়িতে বড় ধরনের বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে এলাকার মানুষের কাছে তাঁর পরিচিতি ‘বোমা কালাম’ হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোনোয়ারুজ্জামান হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আবুল কালাম হিসেবে এলাকার কেউ আর তাঁকে চেনে না। ‘বোমা কালাম’ হিসেবেই তিনি পরিচিত। এ ঘটনায় অন্য আসামিদের আটকের চেষ্টা করছে পুলিশ।