রাতের বেলা কিশোরী মেয়েকে গোপনে বাল্যবিবাহ দিচ্ছিলেন এক বাবা। এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে সেই বিয়ে বন্ধের ব্যবস্থা করেন এবং ১৮ বছর বয়সের আগে মেয়ের বিয়ে দেবেন না—এমন প্রতিশ্রুতি নেন। কিন্তু ওই দিন গভীর রাতেই গোপনে মেয়ের বিয়ে দেন বাবা।
ঘটনার দুই দিন পর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ইউএনও অমিত রায়। বাল্যবিবাহ দেওয়ার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মেয়ের বাবাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন তিনি। আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ৩ নম্বর আলীহাট ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বাল্যবিবাহের শিকার ওই কিশোরী (১৪) স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত বৃহস্পতিবার রাত তিনটার দিকে ওই কিশোরীর সঙ্গে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আইগ্রাম এলাকার সেলিম উদ্দিনের ছেলে রবিউল ইসলামের (২৫) বিয়ে হয়।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর ওয়ার্ডের একটি গ্রামে বাল্যবিবাহের খবর পেয়ে ইউএনও তাঁকে বিয়েটি বন্ধ করার নির্দেশ দেন। পরে তিনি গ্রাম পুলিশ নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন, বরযাত্রীরা বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি মেয়ের বাবাকে অল্প বয়সী মেয়ের বিয়ে না দেওয়ার বিষয়ে পরামর্শ দেন। এতে তিনি রাজি হন। এ সময় বয়স ১৮ হওয়ার আগে মেয়ের বিয়ে দেবেন না বলে তিনি প্রতিশ্রুতিও দেন। তখন তিনি সেখান থেকে চলে আসেন এবং ইউএনওকে বিষয়টি জানান।
ওই জনপ্রতিনিধি আরও বলেন, সকালে জানতে পারেন, ঘটনার দিন রাতেই মেয়ের বাবা গোপনে মেয়ের বিয়ে দেন এবং মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দেন। ঘটনার দুই দিন পর আজ দুপুরে ইউএনও ওই গ্রামে যান এবং মেয়ের বাল্যবিবাহ না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ভেঙে বিয়ের আয়োজন করায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বাবাকে জরিমানা করেন।
ইউএনও অমিত রায় প্রথম আলোকে বলেন, আজ একটি বাল্যবিবাহের ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মেয়ের বাবাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় মেয়ের বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত মেয়েকে নিজের বাড়িতে রাখবেন মর্মে মেয়ের বাবা ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে একটি মুচলেকা দিয়েছেন।