সরু সেতু যখন গলার কাঁটা 

সেতু সরু হওয়ায় মানুষ হেঁটে চলাচল করে। ফলে গাড়ি নিয়ে এলে তিন কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হয়। 

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের সরমঙ্গলা খালের ওপর নির্মিত সেতুটির রেলিং ভেঙে গেছে। চলাচল করতে পারে না গাড়ি

সাড়ে ৩ ফুট চওড়া সেতু। এর ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল ও সাইকেল ছাড়া যেতে পারে না কোনো গাড়ি। এদিকে সেতুর এক পাশের রেলিং নেই। রড বেরিয়ে আছে। ৩০ বছর আগে নির্মাণ হওয়া এ সেতু এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে আশপাশের ১৩ গ্রামের মানুষের। সেতু থাকলেও তাঁরা এর সুফল পাচ্ছেন না।

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার সরমঙ্গলা খালের ওপর শাইলবাড়ি এলাকায় এ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ২ জানুয়ারি সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর নিচের খালটি শুকিয়ে গেছে। এক পাশের রেলিং না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সেতুটি। খুঁটিতে ফাটল ধরেছে। তারপরও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা এ সেতু দিয়ে খাল পার হচ্ছে।

জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শাইলবাড়ি সেতুটি দিয়ে উত্তরডাঙ্গাপাড়া, হাজীপাড়া, আলমপুর, চৌধুরীপাড়া, ঢুলিয়া, ঘোনাপাড়া, দক্ষিণ শাইলবাড়ি, মহিষখোলা, পূর্ব পাড়া, পশ্চিম পাড়া, কোরানিপাড়া, টিনওয়ালাপাড়া, মেম্বারপাড়া, ভীমপুরসহ ১৩টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ চলাচল করে। এসব গ্রামের মানুষের যোগাযোগ সহজ করতে খালের ওপর ৩০ বছর আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত একবারও এ সেতু সংস্কার করা হয়নি। 

এদিকে সেতু সরু হওয়ায় মানুষ হেঁটে চলাচল করে। ফলে যানবাহন ও মালবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। গাড়ি নিয়ে এলে তিন কিলোমিটার বেশি পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে।

ভীমপুর গ্রামের মফিজার রহমান বলেন, ‘সেতুখ্যানের রেলিংগুলা ভাঙি গেইছে। খুঁটিগুলাতও ফাটল ধরছে। বহুদিন থাকি মেরামত করে না। সরু হওয়ায় হামরা এদি (সেতু দিয়ে) গাড়ি নিবার পাই নাই। রাইতোত মানুষ অসুস্থ হইলে সেতুর ওপারোত গাড়ি থুইয়া ঘাড়োত করি রোগী হাসপাতালোত নিবার নাগে।’

স্থানীয় কৃষকেরা বলেন, সেতু সরু হওয়ায় তাঁরা সহজে হাটবাজারে তাঁদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে যেতে পারে না। তাঁদের ভীমপুর-ধোলাইঘাট হয়ে অতিরিক্ত তিন কিলোমিটার পথ ঘুরে ফসল বাজারে নিতে হয়। এতে প্রতি মণ পণ্যসামগ্রী বাজারে নিতে পাঁচ টাকা বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে।

আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, সেতুটির সংস্কারের জন্য তিনি অনেক দপ্তরে গেছেন। উপজেলা পরিষদের মাসিক সভাসহ বিভিন্ন সভায় আলোচনা করা হয়। কিন্তু কোথাও থেকে ইতিবাচক সাড়া মিলছে না।

উপজেলা প্রকৌশলী হায়দার জামান বলেন, ওই সেতুর দৈর্ঘ্য ৯০ ফুট, প্রস্থ সাড়ে ৩ ফুট। সেতু সংস্কার অথবা এখানে কীভাবে নতুন সেতু নির্মাণ করা যায়, তার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।