হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা সদরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে ৯ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ময়েজ উদ্দিনকে প্রধান করে ১৬০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৩০০ জনকে।
নিহত ৯ জনের মধ্যে অন্যতম শিশু হাসান মিয়ার (১২) বাবা মো. ছানু মিয়া বাদী হয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বানিয়াচং থানায় মামলাটি করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) সার্কেলের পলাশ রঞ্জন দে বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ময়েজ উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা ও বানিয়াচং উত্তর-পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হায়দারুজ্জামান খান, বানিয়াচং উপজেলা পরিষদের অব্যাহতি পাওয়া চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, বানিয়াচং উপজেলার মন্দুরী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ শামছুল হক, জেলা যুবলীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী, বানিয়াচং তোপখানা গ্রামের বাসিন্দা ও যুক্তরাজ্যপ্রবাসী শাহ নেওয়াজ প্রমুখ।
এজাহারে বলা হয়, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বানিয়াচং উপজেলার এল আর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে সমবেত হন কয়েক শ শিক্ষার্থী। পরে তাঁদের একটি মিছিল বড়বাজার হয়ে থানার সামনে দিয়ে রওনা হয়। পথে ঈদগা এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনকারীদের বাধা দেন। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটি থেকে একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা ছাত্রদের ওপর হামলা চালান এবং গুলি চালান। এতে ঘটনাস্থলেই বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশা মহল্লার হাসান মিয়া (১২), মাঝের মহল্লার আশরাফুল ইসলাম (১৭), পাড়াগাও মহল্লার মোজাক্কির মিয়া (৪০), কামালহানি মহল্লার নয়ন মিয়া (২০), যাতুকর্নপাড়া মহল্লার তোফাজ্জল (১৮), পূর্বঘর গ্রামের সাদিকুর (৩০), কামালখানি গ্রামের আকিনুর মিয়া (৩২), খন্দকার মহল্লার আনাছ মিয়া (১৮) ও সাগরদিঘি এলাকার সোহেল আখঞ্জী (৩৫) নিহত হন।
মামলার বাদী ছানু মিয়া বলেন, থানা পুড়িয়ে দেওয়ায় ও পুলিশ থানায় উপস্থিত না থাকার কারণে তাঁরা নিহত ব্যক্তিদের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করেন।
এদিকে সাবেক সংসদ সদস্য ময়েজ উদ্দিনসহ কয়েকজন অভিযুক্ত দাবি করেন, ৫ আগস্ট ঘটনার দিন পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ওই নয়জন। এখন আওয়ামী লীগ নেতাদের ফাঁসানো হচ্ছে এ মামলায়।