সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ 

সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগ 

এলাকাবাসী মহাসিং নদের এই স্থানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু সেতু আর হচ্ছে না।

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জের পাগলাবাজারের উত্তরে মহাসিং নদে সেতু নেই। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন আটটি গ্রামের মানুষ। সম্প্রতি তোলা
প্রথম আলো

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলাবাজারের উত্তরে মহাসিং নদের ওপর সেতু না থাকায় এলাকার পাঁচটি গ্রামের মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এলাকাবাসী মহাসিং নদের এই স্থানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু সেতু আর হচ্ছে না। 

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের উত্তর পাশে শতবর্ষের পুরোনো পাগলাবাজার। এলাকার প্রসিদ্ধ এই বাজারের উত্তর পাশে মহাসিং নদ। নদীর ওপারে পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের কাদিপুর, জয়কলস ইউনিয়নের আসামপুর, পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের বাদুল্লাপুর ও শরিয়তপুর গ্রাম। পাগলাবাজার থেকে এই গ্রামগুলোকে পৃথক করে রেখেছে মহাসিং নদ। এসব গ্রামের মানুষের পাশাপাশি এলাকার শরিয়তপুর, চিকারকান্দি, রনসী গ্রামের মানুষও মহাসিং নদের খেয়া পারাপার হয়ে উপজেলা সদর ও পাগলাবাজারে যাতায়াত করেন। পাগলাবাজার ছাড়া ওই এলাকায় আর কোনো বাজার নেই। তাই যেকোনো প্রয়োজনে তাঁদের মাহসিং নদের খেয়া পার হয়ে পাগলাবাজারে আসতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে খেয়ানৌকায় চলাচল করা গেলেও বর্ষায় সমস্যা হয় বেশি। তখন অনেক সময় খেয়ানৌকা মেলে না। সেতু না থাকায় দুর্ভোগে পোহাতে হয় তাঁদের। অনেক সময় নিজেদের নৌকা নিয়ে বাজারে আসা-যাওয়া করতে হয়। এ ছাড়া খেয়ানৌকা অনেক সময় পাওয়া না গেলে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিশেষ করে রোগীরা সমস্যায় পড়েন বেশি। সেতু হলে এসব গ্রামের মানুষ সহজে পাগলাবাজার এবং উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে পারতেন।

 স্থানীয় শরিয়তপুর গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘১৫ বছর ধরে শুনছি, এখানে সেতু হবে। কিন্তু সেতু আর হচ্ছে না। সেতু হলে এলাকার মানুষ খুবই উপকৃত হতেন।’

কাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা আমিরুল হক বলেন, ‘আমরা খুব কষ্ট করে যাতায়াত করছি। আমাদের বাবা-দাদারাও একইভাবে কষ্ট করে গেছেন। রাতে কেউ অসুস্থ হলে সেই রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া যায় না। সকালের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এরই মধ্যে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। সেতু না থাকায় খুবই সমস্যা হচ্ছে।’ গ্রামের সুজেরা বেগম বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা ঠিক সময়ে স্কুলে যেতে পারে না। অনেক সময় খেয়া মেলে না।’ 

শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসনাত হোসাইন বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রীর নির্দেশনায় পাগলাবাজারের উত্তর পাশে একটি সেতু নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন। খুব দ্রুতই কাজ শুরু হবে। 

শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আল-নুর তারেক জানান, এখানে একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাঁরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় জরিপকাজ শেষ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। এখন সেতুর প্রাক্কলন তৈরি হবে। এরপর দরপত্র আহ্বান হবে। তিনি বলেন, ‘এসব প্রক্রিয়া শেষ হলেই সেতুর কাজ শুরু হবে। আশা করি, এখানে সেতু হবে।’