সিলেট নগরে নতুন গৃহকর বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। আজ শুক্রবার রাত আটটায় জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এর আগে সিটি করপোরেশন পরিষদ এক জরুরি সাধারণ সভা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নগর ভবনের সভাকক্ষে মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং কাউন্সিলরদের সর্বসম্মতিক্রমে নতুন গৃহকর বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে পুরোনো ২৭টি ওয়ার্ড ও নতুন ১৫টি ওয়ার্ডসহ ৪২টি ওয়ার্ডের হোল্ডিংগুলোতে গৃহকর পুনর্নির্ধারণের জন্য ‘রিঅ্যাসেসমেন্ট’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি, জনগণের জন্য অকল্যাণ হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত আমি নেব না। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে আমার দায়িত্ব তাঁদের মতামতকে মূল্যায়ন করার। জনগণ ও কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে চলমান অ্যাসেসমেন্ট বাতিল করে নতুন করে রি-অ্যাসেসমেন্ট করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান ও কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় মেয়র আরও জানান, নতুন গৃহকর বাতিল করা হলেও ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে বকেয়া গৃহকর আদায় অব্যাহত থাকবে। বকেয়া গৃহকর প্রদানের জন্য নগরবাসীকে অনুরোধ জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের পর মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘জনগণের মতামতের প্রতি সম্মান রেখে কাউন্সিলরদের নিয়ে জরুরি সাধারণ সভা করে নতুন গৃহকর বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুনভাবে অ্যাসেসমেন্ট ও রিঅ্যাসেসমেন্ট করে পুনরায় গৃহকর নির্ধারণ করা হবে।’
এর আগে পঞ্চবার্ষিক কর পুনর্মূল্যায়নের পর গত ৩০ এপ্রিল থেকে সিটি করপোরেশন নতুন নির্ধারিত বার্ষিক গৃহকর (হোল্ডিং ট্যাক্স) অনুযায়ী ভবনমালিকদের গৃহকর পরিশোধের নোটিশ দেওয়া শুরু করে। এরপর নগরের প্রায় পৌনে এক লাখ ভবনমালিকের গৃহকর ৫ থেকে ৫০০ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। এ নিয়ে নগরজুড়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এর পর থেকে প্রতিদিন নগরের বিভিন্ন সংগঠন গৃহকর বাতিলের দাবিতে নিয়মিত আন্দোলন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন শুরু করে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী গত ১২ মে দুপুরে জরুরি সাধারণ সভা ডাকেন। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি পর্যালোচনার মাধ্যমে গৃহকর সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার ঘোষণা দেন। মেয়র তখন বলেন, গৃহকর নিয়ে আপত্তি থাকলে ভুক্তভোগীরা নির্ধারিত ফরম পূরণ করে সিটি করপোরেশনে আপত্তি জানাতে পারবেন। পরে রিভিউ বোর্ড তাঁদের বিষয়টি শুনানির মাধ্যমে যৌক্তিকভাবে নিষ্পত্তি করবে। তবে আন্দোলনরত ব্যক্তিরা পর্যালোচনার বদলে নতুন গৃহকর বাতিলের দাবি জানান।