গাজীপুরের টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে টঙ্গী বিসিকের পাগাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা কারখানার সামনের সড়কে অবস্থান নেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
ওই কারখানার নাম ‘শিশির নিটিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড’। এটি বিসিকের পাগাড়ে অবস্থিত। কারখানাটিতে কাজ করেন প্রায় সাড়ে ৫০০ জন শ্রমিক।
পুলিশ ও কারখানার শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, কারখানাটিতে এখনো জানুয়ারি ও গত ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন বাকি। এর মাঝে আজ সব বেতন পরিশোধের কথা জানায় মালিকপক্ষ। এ নিয়ে সকাল থেকে বেতনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন শ্রমিকেরা। কিন্তু দুপুর পেরিয়ে বিকেলে হয়ে গেলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করছিলেন না। এ নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন শ্রমিকেরা। একপর্যায়ে কারখানা থেকে বিসিকের একটি শাখা সড়কে অবস্থান নেন। বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের বেতনের আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা সড়ক ছেড়ে দেন।
শিল্প–পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মোশারফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কারখানাটিতে জানুয়ারি ও গত ফেব্রুয়ারি মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। মালিকপক্ষ গতকাল সব পাওনা পরিশোধের কথা দিলেও বিভিন্ন কারণে তা পরিশোধ করতে পারছিলেন না। এ নিয়ে শ্রমিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। পরে আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আগামী শনিবার–রোববারের মাঝে বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা সড়ক থেকে সরে যান।’
৩৩৯ শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা
গত মঙ্গলবার টঙ্গীর খাঁপাড়ার ‘সিজনস ড্রেসেস লিমিটেড’ কারখানায় ভাঙচুরের ঘটনায় ৩৯ জন শ্রমিকের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। গতকাল দুপুরে টঙ্গী পশ্চিম থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়।
এজাহারে বলা হয়, কারখানাটিতে গত ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন বকেয়া। গত সোমবার সে বেতন পরিশোধের কথা জানায় কারখানা কৃর্তপক্ষ। কিন্তু রোজায় ব্যাংকে কর্মঘণ্টা কম থাকায় সেদিন বেতন পরিশোধ করতে পারেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ কারণে পরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার কাজে যোগ দিতে এসে শ্রমিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে কারখানার ২০০ থেকে ৩০০ শ্রমিক জড়ো হয়ে কারখানার থাই গ্লাস, দরজা-জানালা, সিসি ক্যামেরা, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর ও তৈরি পোশাক চুরি করে নিয়ে যান। এতে কারখানাটির প্রায় ৯২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। পরে কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কারখানা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ তদন্ত করে দেখছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মো. রেজাউল করিম নামের এক কারখানা শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি এজাহারনামীয় আসামি।’