কুষ্টিয়া জেলার মানচিত্র
কুষ্টিয়া জেলার মানচিত্র

কুষ্টিয়ায় কলেজে যোগ দিতে গিয়ে উপাধ্যক্ষ লাঞ্ছিত, সহকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের উপাধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াসমিন কলেজে যোগ দিতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁকে লাঞ্ছিতের ভিডিও ক্লিপ গতকাল বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় তিনি কলেজের শিক্ষক টিপু সুলতানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সাবিনা ইয়াসমিনের হাত ধরে টেনেহিঁচড়ে অধ্যক্ষের চেয়ার থেকে তুলে দিচ্ছেন শিক্ষক টিপু সুলতান। এ সময় সাবিনা ইয়াসমিনকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়।

লিখিত অভিযোগে সাবিনা ইয়াসমিন উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালে তিনি উপাধ্যক্ষ (ভাইস প্রিন্সিপাল) হিসেবে দায়িত্বে থাকাকালে কলেজের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি খোঁড়া যুক্তিতে অন্যায়ভাবে তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন। গত বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের এক চিঠির আদেশে তিনি স্বপদে যোগ দিতে যান। এ সময় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাবিবুল ইসলামসহ বেশ কয়েক শিক্ষক তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করেন। একপর্যায়ে দর্শন বিভাগের শিক্ষক টিপু সুলতান তাঁর মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন। এরপর তাঁকে টেনেহিঁচড়ে মারধর করে কলেজ থেকে বের করে দেন।

এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, ‘লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, এটা অস্বীকার করছি না। কিন্তু অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে আইন না মানার দম্ভ দেখানো তাঁর (সাবিনা ইয়াসমিন) ঠিক হয়নি। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আইনি জটিলতা নিষ্পত্তির কোনো দলিলও তিনি দেখাতে পারেননি।’

অভিযুক্ত শিক্ষক টিপু সুলতান বলেন, ‘আমাকে সে বিভিন্ন সময় হয়রানি করেছে। তাই সাবিনা ইয়াসমিন কলেজে এসে প্রিন্সিপালের চেয়ারে বসে পড়ায় সবাই ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বের করে দিয়েছে।’

সাবিনা ইয়াসমিন দাবি করেন, কলেজে নিয়মিত অধ্যক্ষ না থাকায় উপাধ্যক্ষ হিসেবে তিনিই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হন। এ জন্য অধ্যক্ষের চেয়ারে বসেছিলেন। সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘সাড়ে সাত বছর ধরে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। সব ডকুমেন্ট আমার পক্ষে থাকলেও আমাকে কলেজে যোগদান করতে দেওয়া হচ্ছে না। বরং কলেজে গেলে আমার ওপর হামলা করা হয়েছে। আমি তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার ছিলাম। সে জন্য আমাকে তাদের পোষা ম্যানেজিং কমিটিকে দিয়ে অন্যায়ভাবে কলেজ থেকে বরখাস্ত পর্যন্ত করিয়েছিল। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অবৈধভাবে চেয়ার দখল করে আছেন। আমি আইনি লড়াই শেষে পুনরায় যোগদান করতে গেলে আমাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।’

অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাবিবুল ইসলাম বলেন, ‘সাবিনা ইয়াসমিন কলেজে এলে হট্টগোল হয়। তার ওপর কারা হামলা করেছে, আমি জানি না।’

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, থানায় একটি অভিযোগ জমা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।