দেশে এখন এক দফার নতুন সংগ্রাম শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘দেশে আজ নতুন সংগ্রাম শুরু হয়েছে। এই সংগ্রাম বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে। দেশে এখন দফা একটাই, তা হচ্ছে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ। দেশের তরুণেরা এই দাবিতে শামিল হয়েছে।’
গতকাল শনিবার বিকেলে বরিশালে বিভাগীয় তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল। সমাবেশে বিভাগের সব জেলা থেকে নেতা-কর্মীরা যোগ দেন। বিভাগীয় শহরগুলোতে ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ করছে বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন। এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা গতকাল বরিশালে সমাবেশ করল।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বরিশালের এই সমাবেশে তারুণ্যের উপস্থিতি আমাদের সাহসী করেছে, হৃদয় স্পন্দিত করেছে। এই রোদ, তীব্র গরম ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে অনেক কষ্টে তরুণ এখানে সমবেত হয়েছে। এটা কিসের জন্য? দফা একটাই, সেটা শেখ হাসিনার পদত্যাগ।’
সরকার গত ১৪ বছরে বিএনপির ৭০০ নেতা-কর্মীকে গুম করেছে—এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মঞ্চে বরিশালের ছাত্রদল নেতা ফিরোজ খান ও মিরাজ খানের মা উপস্থিত আছেন। তাঁর দুই ছেলেকে ১১ বছর আগে গুম করা হয়েছিল। কারা গুম করেছিল? গুম করেছিল সাদাপোশাকধারীরা। শুধু কি ফিরোজ ও মিরাজ গুম হয়েছে? না। এই সরকার তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিএনপির ৭০০ নেতা-কর্মীকে গুম করেছে। ইলিয়াসের ছেলেমেয়ে আজও বাবার ফিরে আসার অপেক্ষায় আছে। শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকতে তারা এই অত্যাচার-নির্যাতন, গুম, খুন চালাচ্ছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তারা (সরকার) বলে, “তাদের অধীনে নাকি ভালো নির্বাচন হয়।” বরিশালে কয়েক দিন আগে সিটি নির্বাচন হলো। কী হলো, আবার সেই একই ইভিএম ব্যবহার করল। চরমোনাইয়ের পীর সাহেবকে আঘাত করতে পর্যন্ত দ্বিধা করল না। সিইসি বলল, “তিনি কি ইন্তেকাল করেছেন।” এমন নির্বাচন কমিশন এই সরকার বানিয়েছে যে তিনি না মরলে শান্তি পান না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের কথা পরিষ্কার—এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। আমরা যাব না। এটা এখন বিদেশিরাও বলেছেন। এই সরকার আমাদের ৪০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। দেশে নিত্যপণ্যের বাজার এখন অসহনীয়। যারা চুরি করে টাকা আয় করে, তাদের সমস্যা নেই। কিন্তু আমাদের সন্তানেরা স্কুলে যেতে পারে না। তাই আজ তরুণদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জেগে উঠতে হবে, গর্জে উঠতে হবে। আমরা নির্বাচন চাই, শেখ হাসিনার অধীনে নয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সেই নির্বাচন হতে হবে।’
সমাবেশে যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছি। এ জন্য তরুণদের রাজপথে নামতে হবে। এই সংগ্রামের চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাব না।’
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানি, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ মাহমুদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার প্রমুখ বক্তব্য দেন।