নিরাপরাধ সেই লিটনকে মুক্তি দিতে আদালতের আদেশ

নামের মিলের কারণে আসামি না হয়েও জেল খাটছেন মো. লিটন
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় শুধু নামের মিলের কারণে জেলখাটা নিরপরাধ মো. লিটনকে (৪০) মুক্তি দিতে আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ আদেশ দেন। পুলিশের ভুলে তিনি বিনা দোষে ১০ দিন ধরে কারাভোগ করছেন।

লিটনের আইনজীবী সুলতা নাথ বলেন, এ আদেশের ফলে নিরাপরাধ লিটনের মুক্তিতে আর বাধা থাকল না। সব ঠিক থাকলে মঙ্গলবার তিনি কারামুক্ত হতে পারেন।
এ ঘটনায় গত শনিবার প্রথম আলো অনলাইন সংস্করণে ‘শুধু নামের মিলের কারণে জেল খাটছেন লিটন’ শিরোনামে এবং পরদিন ‘পুলিশের ভুলে কারাগারে নিরপরাধ’ শিরোনামে প্রথম আলো ছাপা সংস্করণে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

আইনজীবী সুলতা নাথ প্রথম আলোকে বলেন, ১৫ ডিসেম্বর শুনানিতে লিটন নিরপরাধ বলে বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ তুলে ধরেন। এরপর আদালত বিষয়টি আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদকে নির্দেশ দেন। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে লিটন নিরপরাধ বলে আদালতে একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয় এবং বিষয়টি ভুল হয়েছে বলে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ভুল হবে না, গ্রেপ্তারের বিষয়ে আরও সতর্ক থাকার অঙ্গীকার করা হয়।

সুলতা নাথ আরও বলেন, পুলিশের প্রতিবেদনের পাশপাশি প্রথম আলোসহ দুটি পত্রিকায় ‘লিটন নিরপরাধ’ বিষয়টি উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে বলে তিনি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। পরে শুনানি শেষে পুলিশকে উদ্দেশ করে আদালত বলেছেন, ‘শুধু নাম ও বাবার নামে মিল থাকলে আসামি শনাক্ত করেন, আর কিছু দেখা লাগে না?’

লিটনের ছেলে মো. নুর উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছে। ফলে আদালত এ মামলা থেকে তাঁর বাবাকে অব্যাহতি দিয়েছেন। তাঁর বাবার মুক্তিতে এখন আর বাধা নেই। তাই তাঁরা খুশি। মঙ্গলবার সকালে তাঁর বাবার মুক্তি হতে পারে।

এর আগে ২০১৪ সালের ১০ জুন রাতে উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের কাজীপাড়া এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ছয় ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দিন প্রকৃত আসামি লিটনকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন গ্রেপ্তার ছয়জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে সীতাকুণ্ড থানায় একটি মামলা করেন তৎকালীন এসআই মো. ইকবাল হোসেন। এরপর জামিনে এসে লিটন বিদেশে চলে যান। প্রকৃত আসামি লিটন পলাতক থাকায় আদালত লিটনকে এক বছরের সাজা দেন। প্রকৃত আসামির নাম ও বাবার নামের সঙ্গে মিল থাকায় ৯ ডিসেম্বর উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের ভায়েরখিল এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা আলমারির দোকানি লিটনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।