ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের কবি জসীমউদ্দীন ছাত্রাবাসে বহিরাগত ব্যক্তিদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শহরতলির বায়তুল আমান এলাকায় সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের স্নাতক শাখায় এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় কলেজের তিন ছাত্রকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ সময় ছাত্রদের তিনটি কক্ষ ও টিভি কক্ষে ভাঙচুর চালিয়ে তছনছ করেন বহিরাগত ব্যক্তিরা। আহত শিক্ষার্থীরা হলেন মো. শাকিল মৃধা (২৩), তুষার মাহমুদ (২৪) ও মো. রেজা মিয়া (২০)। তাঁরা ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক গণেশ কুমার আগরওয়ালা বলেন, আহত শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কলেজের মাঠে ছাত্রদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারা ফুটবল খেলেন। আজ বিকেলে ফুটবল খেলার সময় ছাত্রদের একটি বল মাঠের যে অংশে এলাকাবাসী খেলছিলেন, সেদিকে যায়। তখন বলটি জব্দ করা নিয়ে কলেজের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মধ্যে বাদানুবাদ হয়। এর জেরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে এলাকার অর্ধশতাধিক তরুণ জসীমউদ্দীন ছাত্রাবাসে গিয়ে ছাত্রদের কক্ষে ভাঙচুর শুরু করেন। এ সময় ছাত্ররা বাধা দিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁদের কুপিয়ে জখম করা হয়। খবর পেয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ফরিদপুর পৌরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আবদুল হকের অনুসারীরা এ হামলা করেছেন। কাউন্সিলরের দাপটের কারণে তাঁর সমর্থক তরুণেরা কোনো কিছু পরোয়া করেন না।
অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ঘটনার সময় এলাকায় ছিলাম না। তবে এলাকায় একটা মারামারি হয়েছে শুনেছি। এ ঘটনায় শুধু আমার এলাকার লোকজন নয়, অন্য এলাকার তরুণেরাও জড়িত ছিলেন।’ হামলাকারীরা তাঁর অনুসারী কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এলাকার কাউন্সিলর। সে হিসেবে এলাকার সবাই আমার লোক।’
সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ অসীম কুমার সাহা বলেন, ছাত্রাবাসে হামলার খবর পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানান। পাশাপাশি তিনিও দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, ছাত্রাবাসের ছাত্রদের পেটানো হয়েছে, কুপিয়ে জখম করা হয়েছে, কক্ষগুলো তছনছ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাহবুব বলেন, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে কলেজের ছাত্রাবাসে বহিরাগত ব্যক্তিরা হামলা করে ভাঙচুর করেন। এ সময় সাত-আট শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি বলেন, যাঁরা হামলায় জড়িত, তাঁদের নাম সংগ্রহ করে দুটি বাড়িতে অভিযানও চালানো হয়েছে। তবে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।