অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ আর ঘরোয়া সভা ছেড়ে এবার রাজপথে প্রকাশ্যেই নিজেদের কোন্দল প্রকাশ করল খুলনার কয়রা উপজেলা বিএনপির দুটি পক্ষ। আজ শুক্রবার মহান বিজয় দিবসে উপজেলা বিএনপির দুটি পক্ষ পাল্টাপাল্টি মহড়া দিয়েছে।
আজ সকাল সাতটার দিকে কয়রা আদালত ভবন–সংলগ্ন এলাকার উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা জড়ো হন। একই সময়ে উপজেলা পরিষদ–সংলগ্ন এলাকার অপর যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হাসানের নেতৃত্বে বিএনপি নেতা-কর্মীরা ছোট ছোট দলে এসে জমায়েত হতে থাকে। পরে দুই পক্ষ আলাদাভাবে স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
এরপর দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা আলাদাভাবে কয়রা সদরে মহড়া দেন। যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিনের নেতৃত্বে মহড়ায় অংশ নেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলা বক্স, বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মনজুরুল আলম, রফিকুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান ফকির, উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব মোতাছিম বিল্লাহ, শ্রমিক দলের আকবর হোসেন, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর তৌহিদ প্রমুখ।
মহড়া শেষে নুরুল আমিন সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা রাজপথে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব। যারা আমাদের বাইরে আলাদাভাবে প্রোগ্রাম করছে, তারা দলের মূল ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন। ভিন্নভাবে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার পাঁয়তারা করছে। দলের মধ্যে তাদের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।’
অপরদিকে যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হাসানের নেতৃত্বে মহড়ায় অংশ নেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক কোহিনুর ইসলাম, বিএনপি নেতা শেখ সালাউদ্দিন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম, সদস্যসচিব হেলাল উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফ বিল্লাহ, সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমান প্রমুখ।
শোডাউন শেষে এম এ হাসান সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, ‘উপজেলা বিএনপির অধিকাংশ নেতা আমাদের সঙ্গে আছেন। যাঁরা ভিন্নভাবে চলতে চাচ্ছেন, মূলত তাঁরা দীর্ঘদিন ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার চেষ্টা করে চলেছেন। বিএনপির ত্যাগী নেতা-কর্মীরা তাঁদের সঙ্গে নেই। ভবিষ্যতে ত্যাগী নেতারাই বিএনপিতে যোগ্য সম্মান পাবেন।’
দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি কয়রা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোমরেজুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও নুরুল আমিন বাবুল, এম এ হাসানসহ আটজনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়। তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কথা থাকলেও এখনো তা হয়নি।
এ বিষয়ে খুলনা খুলনা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এস এম মনিরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন ছাড়া এ সরকার পতনের কোনো সম্ভাবনা নেই। কয়রা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এলাকায় না থাকায় যুগ্ম আহ্বায়কদের মধ্যে ভুল–বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। আমরা শিগগিরই বিবদমান দুই পক্ষের সঙ্গে বসব। উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিও তাড়াতাড়ি গঠন করা হবে। তখন সব ভুল–বোঝাবুঝির অবসান হবে।’