নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির নতুন ভবন উদ্বোধন শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের হাতে কম্পিউটার, প্রিন্টারসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোর আইনজীবী সমিতির নতুন ভবনের
নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির নতুন ভবন উদ্বোধন শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের হাতে কম্পিউটার, প্রিন্টারসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোর আইনজীবী সমিতির নতুন ভবনের

আইনজীবী ও বিচারক একই পরিবারের দুটি সন্তান, সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘আইনজীবী ও বিচারক একই পরিবারের দুটি সন্তান। কখনো কখনো মতের মিল না–ও হতে পারে। কিন্তু স্মরণ রাখতে হবে, এতে যেন বার ও বেঞ্চের সুসম্পর্ক নষ্ট না হয়। কারণ, অগণিত বিচারপ্রার্থী আমাদের (বার ও বেঞ্চ) মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন। তাঁদের ন্যায়বিচার দিতে হবে। বিচার দিতে হলে আমাদের সুসম্পর্ক বজায় রাখতেই হবে।’ আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসনিার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আমাদের সবাইকে সব ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিচার বিভাগ নিয়ে বলা হয়, বার ও বেঞ্চ একটি পাখির দুটি ডানা। আমি বলি আইনজীবী ও বিচারক একই পরিবারের দুটি সন্তান। কখনো কখনো মতের মিল না–ও হতে পারে। লাগালাগি হতে পারে। কিন্তু স্মরণ রাখতে হবে, এতে যেন বার ও বেঞ্চের সুসম্পর্ক নষ্ট না হয়।’

নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ। অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, আইনসচিব গোলাম সারওয়ার, নাটোরের জেলা জজ মো. শরীফ উদ্দীন ও নাটোরের সরকারি কৌঁসুলি সিরাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শেখ গোলাম মাহবুব, নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনোয়ারুল হক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সাজেদুর রহমান খান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম মালেক শেখ।

আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা স্ত্রী-সন্তানসন্ততির সঙ্গে যত সময় না কাটাই, তার চেয়ে বেশি সময় অতিবাহিত হয় আদালত অঙ্গনে। তাই বিচারাঙ্গনকে পরিবার থেকে আলাদা ভাবা যাবে না। আমি যেখানেই যাই, সেখানকার আইনজীবীরা বলেন, “বিচারকদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে।” শুনে আমার ভীষণ ভালো লাগে। তবে দু-একটা ইনসিডেন্ট হয় বা হচ্ছে। এটা ভুলে যেতে হবে। আমাদের সম্পর্কটা আরও দৃঢ় করতে হবে।’

বক্তব্য শেষে আইনমন্ত্রী নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির বঙ্গবন্ধু কর্নার করার জন্য ২০ লাখ টাকা ও নতুন ভবনের জন্য ২৫ লাখ টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন। সেই সঙ্গে নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের হাতে কম্পিউটার, প্রিন্টারসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য প্রতিটি জেলা আইনজীবী সমিতিতে শেখ রাসেল আইটি কর্নার গঠন করা হবে। করোনার সময় আইনজীবী ও বিচারকেরা ভার্চ্যুয়াল বিচারিক জগতে প্রবেশ করেছেন। মহামারিতেও দেশে ১ লাখ ৫০ হাজার মামলার ভার্চ্যুয়াল নিষ্পত্তি হয়েছে। আইটি কর্নার গঠনের মধ্য দিয়ে বিচারব্যবস্থাকে আরও ডিজিটালাইজড করা হবে।

অনুষ্ঠানে আইনসচিব গোলাম সারওয়ার বলেন, ‘পাখির একটি ডানা ভেঙে গেলে অন্যটিও সমস্যায় পড়ে। তাই বার ও বেঞ্চ কাউকেই ক্ষতিগ্রস্ত করা উচিত হবে না। আমার বিচারক ভাইবোনেরা আইনজীবীদের সঙ্গে আরও সুসম্পর্ক গড়ে তুলবেন। তবে নীতিতে অটল থাকবেন।’

সভাপতির বক্তৃতায় আইনজীবী সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন তালুকদার বলেন, বিচারক ও আইনজীবীদের পারস্পরিক সহযোগিতায় নাটোর জেলায় মামলা নিষ্পত্তির হার অন্য জেলার চেয়ে অনেক বেশি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক নাটোরে কর্মরত বিচারকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।