গজারিয়ায় আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৭

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত একজন। সোমবার বিকেলে উপজেলার নতুন চরচাষী এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

মুন্সিগঞ্জ-৩ (সদর ও গজারিয়া) আসনের প্রতীক বরাদ্দের পর আওয়ামী লীগের প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাস ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ফয়সালের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আজ সোমবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে তাঁরা মিছিলের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের নতুন চরচাষী এলাকায় সংঘর্ষে জড়ান। এতে উভয় পক্ষের অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। এ সময় একটি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে।

মৃণাল কান্তি দাস পক্ষের আহত ব্যক্তিরা হলেন নতুন চরচাষী গ্রামের শ্রমিক লীগ নেতা মো. জাহাঙ্গীর ও গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইমন মুন্সী। মোহাম্মদ ফয়সাল পক্ষের আহত ব্যক্তিরা হলেন পুরান চরচাষী গ্রামের মোখলেস মিয়া, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন মোল্লা, মোশারফ হোসেন, নতুন চরচাষী গ্রামের নিজাম উদ্দিন ও হেলাল উদ্দিন।

মোহাম্মদ ফয়সাল জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য। তিনি দলের মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন। মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। আজ সকালে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তিনি কাঁচি প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। মৃণাল কান্তি দাস আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক। তিনি ২০১৪ ও ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবারও তিনি দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। আজ সকালে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তিনি নৌকা প্রতীক আনুষ্ঠানিকভাবে বরাদ্দ পেয়েছেন।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন মোল্লা মোহাম্মদ ফয়সালের সমর্থক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। অপর দিকে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মাহবুব আলম মৃণাল কান্তি দাসের পক্ষে কাজ করছেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। আজ প্রতীক পাওয়ার পর নৌকা ও কাঁচি প্রতীকের সমর্থকেরা মিছিলের প্রস্তুতি নেন। বেলা পৌনে তিনটার দিকে নতুন চরচাষী এলাকায় মহিউদ্দিন মোল্লার লোকজন নিয়ে অবস্থান করছিলেন। এ সময় ওই পথ দিয়ে মাহবুব আলমের মিছিলে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন শ্রমিক লীগ নেতা মো. জাহাঙ্গীর ও গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইমন মুন্সী। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটির জের ধরে মারামারি বাধে। খবর পেয়ে ওই এলাকায় মাহবুবের লোকজন ছুটে আসেন। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

মাহবুব আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘শ্রমিক লীগ নেতা জাহাঙ্গীর ও ছাত্রলীগ নেতা ইমনকে মহিউদ্দিন তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ভেতর ধরে নিয়ে মারধর করেছেন। আমরা বিষয়টি জানতে এলে তাঁরা আমাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। পরে তাঁদের লাঠির আঘাতে ব্যবসায়িক কার্যালয়ের কাচ ভেঙে তাঁদের মাথা কেটে যায়।’

মহিউদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘নৌকার পক্ষের মাহবুব আলমসহ ১৫ থেকে ২০ জন সন্ত্রাসী লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেন। আমাদের পাঁচজন কর্মীকে তাঁরা পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। এ সময় হামলাকারীরা আমার একটি দোকান ভাঙচুর করেন।’

এ বিষয়ে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজিব খান জানান, পূর্বশত্রুতা ও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষের সংঘর্ষ করেছে। ঘটনা জানার পরপরই পুলিশ সেখানে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।