সিলেট-৩

ভোট বর্জন করা স্বতন্ত্র প্রার্থী বললেন, ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে

‌সিলেট-৩ আসনে সংসদ স্বতন্ত্র প্রার্থী ইহতেশামুল হক চৌধুরী নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন। সোমবার দুপুরে সিলেট নগরের জিন্দাবাজারের এক‌টি হোটেলে
ছবি: প্রথম আলো

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) আসনে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ইহতেশামুল হক চৌধুরী ভোট শেষ হওয়ার প্রায় ১০ মিনিট আগে অনিয়মের অভিযোগ এনে বর্জন করেছিলেন। এরপর ফলাফলও বর্জন করেন। ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর আজ সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডেকে নৌকার প্রার্থী ও নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছেন ইহতেশামুল।

আসনটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ছয়জন। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী আসনটিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হাবিবুর রহমান ৭৯ হাজার ৬৭১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ইহতেশামুল হক চৌধুরী ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৮৩৬ ভোট।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব এবং আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ইহতেশামুল বলেন, তাঁর আসনে ব্যাপক অনিয়ম, সন্ত্রাস ও জালিয়াতি হয়েছে। ভোটের দিন দুপুরের পর থেকেই সন্ত্রাস আর জাল ভোটের মহোৎসব চলেছে। নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর থেকেই তাঁর কর্মীদের দেখে নেওয়ার হুমকি, ভোট কেন্দ্রে না যাওয়া, পোস্টার-লিফলেট ছিঁড়ে ফেলা, অভিভাবকদের হুমকি ইত্যাদি নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। নির্বাচনের কয়েক দিন আগে যেটি বেশি মাত্রায় বেড়ে যায়।

ভোটের আগে নৌকার প্রার্থী নির্বাচনী এলাকায় আচরণবিধি লঙ্ঘন করে কম্বল বিতরণ, বিদ্যালয়ে অনুদান দেওয়ার প্রকাশ্য ঘোষণা, তোরণ নির্মাণ এবং ভোটারদের কাছে টাকা বিতরণ করার ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ইহতেশামুল। তিনি বলেন, বিষয়গুলো তিনি লিখিত এবং মৌখিকভাবে রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিষয়গুলো নির্বাচন কমিশনের কোনো প্রতিনিধির নজরে আসেনি অথবা আমলে নেননি। এতে তিনি অবাক হয়েছেন।

ইহতেশামুল হক চৌধুরীর দাবি, ভোটের বেলা ৩টায় ৪৭টি কেন্দ্র থেকে তাঁর এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকা প্রার্থীর এজেন্টরা নির্বাচন পরিচালনাকারীদের সহায়তায় জাল ভোটের উৎসব শুরু করে। কোনো প্রতিকার না পেয়ে বিকেল পৌনে তিনটার দিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন বলে জানান ইহতেশামুল। এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবরে চিঠি প্রেরণ করেছেন বলেও তিনি জানান।

নির্বাচন পরবর্তী সময়ে নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন কর্মী সমর্থকদের মারধর, বাড়ি ছাড়া করার ঘটনা ঘটছে জানিয়ে স্বতন্ত্র এই প্রার্থী বলেন, নির্বাচনের দিনের ঘটনাগুলো দেখে প্রধান নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের নির্দেশনা স্থানীয় নির্বাচন কার্যালয় প্রতিপালনে আগ্রহী কিংবা উদ্যোগী ছিল না। ইহতেশামুল জানান, তাঁর এলাকায় নির্বাচন নিয়ে আরও তথ্য সংগ্রহ করছেন। এরপর এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্তে যাবেন।

তবে সিলেটের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, তিনি অনিয়মের কোনো অভিযোগ পাননি। ভোট সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ হয়েছে।