কুমিল্লায় বিএনপির গণসমাবেশের এক দিন আগেই মুখর টাউন হল মাঠ

গণসমাবেশের এক দিন আগে আজ শুক্রবার বিভিন্ন জেলা থেকে আসছে খণ্ড খণ্ড মিছিল। নগরের বাদুরতলা এলাকায়
ছবি: এম সাদেক

কুমিল্লায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে আগামীকাল শনিবার। তবে এর এক দিন আগেই আজ শুক্রবার জেলা সদরের টাউন হল মাঠ দলীয় নেতা-কর্মীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। মাঠে নেতা-কর্মীরা মিছিল করছেন, সেখানেই চলছে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা। সমাবেশস্থলে আসা নেতা-কর্মীদের বেশির ভাগই চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার।

আজ সকাল নয়টায় কুমিল্লা টাউন হল মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কৃত নেতা মনিরুল হক (সাক্কু) মাঠের পূর্বপাশে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মুক্তমঞ্চে নিজের অনুসারীদের নিয়ে অবস্থান করছেন। সেখানে খিচুড়ির প্যাকেট বিলি করছিলেন তিনি।

মনিরুল হক বলেন, ‘তিন হাজার প্যাকেট খিচুড়ি সকালে বিলি করেছি। নামাজও এই মাঠে হবে। এখানে আমি সমাবেশের শেষ পর্যন্ত থাকব। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত তিনটা পর্যন্ত এখানে ব্রাজিল ও সার্বিয়ার বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখেছি।’

কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কালামের অনুসারীরা তাঁর নামে মিছিল ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে এসেছেন। একই এলাকায় সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ার উল আজিমের নামেও মিছিল হয়েছে।

চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও দক্ষিণের বিএনপি নেতা মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন তাঁর অনুসারীদের নিয়ে গণসমাবেশে এসেছেন। একই রঙের টি-শার্ট পরে তাঁরা বড় একটি মিছিল করেছেন। চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা খান বলেন, ‘গতকাল থেকে কুমিল্লায় অবস্থান করছি। এই গণসমাবেশে সরকার ভীত হয়ে পড়েছে। মানুষ বিএনপির কর্মসূচির সঙ্গে একমত হয়ে এখানে জড়ো হচ্ছে।’

সমাবেশস্থলের পূর্বপাশে মুক্তমঞ্চে নিজের অনুসারীদের নিয়ে অবস্থান করছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মনিরুল হক। সেখানে খিচুড়ির প্যাকেট বিলি করছিলেন তিনি

আজ দুপুর ১২টার দিকে টাউন হল মাঠের সভাস্থল পরিদর্শনে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এ সময় জেলা ও মহানগর নেতারা তাঁর সঙ্গে ছিলেন। টাউন হল মাঠের পশ্চিম পূর্ব কোণে মঞ্চ তৈরি হচ্ছে।

গণসমাবেশ উপলক্ষে টাউন হল এলাকায় ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড, পোস্টারে সয়লাব হয়ে গেছে। যে যার মতো ব্যানার, ফেস্টুন লাগিয়ে একাকার করে ফেলেছেন। দোকানপাট, ভবন, সবখানেই ব্যানারে ঢেকে গেছে।

পুরো টাউন হল মাঠ ছাড়াও কান্দিরপাড় এলাকায় এখন হাঁটা কঠিন হয়ে পড়েছে। কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ এসব এলাকায় এসে জড়ো হয়েছেন। নগরের ফরিদা বিদ্যায়ন, ঈদগাহ মাঠ, জিলা স্কুল এলাকাও লোকে লোকারণ্য।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদ বলেন, বিকেলের পর মানুষ জায়গা দিতে পারব কিনা সন্দেহ আছে। এত নেতা-কর্মী আসছেন। সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে সহ–অবস্থান নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এত লোকের উপস্থিতিই প্রমাণ করে দেশের জনগণ এই সরকার কে আর চায় না। মানুষ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা। গুম ও খুনের বিরুদ্ধে সোচ্চার। ভোটের অধিকার পেতে লড়াই করছে মানুষ।