শরীয়তপুরে এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার শরীয়তপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকার এ রায় ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় জড়িত আরও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রত্যেক আসামিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ব্যক্তির নাম বাবু চোকদার। তিনি ডামুড্যা উপজেলার বাসিন্দা। আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন জুয়েল খান, ফারুক সরদার ও তানভির হোসেন। রায় ঘোষণার সময় চার আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালতের নির্দেশে তাঁদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় ডামুড্যা উপজেলার ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরী। পরদিন বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরের একটি খাল থেকে তার হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিনই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ডামুড্যা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এর দুই দিন পর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বাবু চোকদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা করার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। এ ছাড়া ওই ঘটনায় তাঁকে জুয়েল খান, ফারুক সরদার ও তানভির হোসেন সহযোগিতা করেন বলে তিনি পুলিশকে জানান। পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। ওই চারজন আদালতে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। পরবর্তীকালে পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
আজ দুপুরে শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ হত্যা ও ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামলার আসামিরা আদালতে কাঙ্ক্ষিত ন্যায়বিচার পাননি। আমরা উচ্চ আদালতে ন্যায়বিচারের জন্য এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব।’
শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ফিরোজ আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘নারী ও শিশুর প্রতি চরম সহিংসতা হয়েছে। মামলার তদন্তে ও সাক্ষ্য প্রমাণে তা প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে আদালত সঠিক রায় দিয়েছেন। আমরা ন্যায়বিচার পেয়ে আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞ। এমন রায় হওয়ার কারণে সমাজ থেকে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা কমে যাবে।’