‘নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাসমূহের সমন্বয়ে প্রশাসনিক বিভাগ ঘোষণা করতে হবে। বিভাগের নাম হবে নোয়াখালী এবং বিভাগীয় শহরও হবে নোয়াখালী। অন্য কোনো জেলার নামে বিভাগ মেনে নেওয়া হবে না।’
আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে এসব দাবি নিয়ে নোয়াখালী জেলা শহরের মাইজদীতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এবং শহরের প্রধান সড়কে সম্মিলিত নোয়াখালীবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে।
মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। প্রায় আধা ঘণ্টার মানববন্ধন শেষে অংশগ্রহণকারীরা নোয়াখালীকে প্রশাসনিক বিভাগ ঘোষণার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে মোহাম্মদীয়া মোড়, টাউনহল মোড়, জামে মসজিদ মোড় ও পৌর বাজার হয়ে পুনরায় একই স্থানে এসে মিলিত হয়। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শেষে অংশগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সকাল থেকে মূল আয়োজক নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের সদস্যরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। এরপর একে একে সেখানে জড়ো হন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মীসহ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন মঞ্চ, ড্রিম লাইট অব হেল্প সেন্টার, মানবিক ব্লাড ফাউন্ডেশন, চৌমুহনী ব্লাড ফাউন্ডেশন, সার্ভিস ফর হিউম্যান বিং অর্গানাইজেশন (এসএইচবিও), আমাদের প্রাণের নোয়াখালী, কুহক সমাজ কল্যাণ ও সাইবার অর্গানাইজেশনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন।
সমাবেশে বক্তব্য দেন নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক সাইফুর রহমান, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক মেহেদী হাসান প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন, নোয়াখালীবাসী দীর্ঘদিন ধরে বিভাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্যসচিব মো. মোখলেস উর রহমান সাংবাদিকদের বলেছেন কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ করবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। তাঁর এই দাবি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। বিভাগ করতে হলে নোয়াখালী নামেই বিভাগ করতে হবে এবং বিভাগীয় শহর হবে নোয়াখালী। অন্য কোনো জেলার নামে বিভাগ মেনে নেওয়া হবে না।
এ বিষয়ে সাইফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কোনো জেলাকে কোনো নতুন বিভাগের অন্তর্ভুক্ত করতে হলে ওই জেলায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গণশুনানি করতে হয়। শুনানির মতামতের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন সুপারিশ করে। কিন্তু নোয়াখালীতে এ রকম কোনো শুনানি হয়নি। তা ছাড়া নোয়াখালীর সর্বস্তরের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন করছেন। সেই আন্দোলনকে পাশ কাটিয়ে অন্য জেলার নামে বিভাগ নোয়াখালীবাসী কখনো মানবে না। নোয়াখালী একটি প্রাচীন জেলা। এই জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য অনেক সমৃদ্ধ। নতুন বিভাগ করতে হলে নোয়াখালীকেই বিভাগ হিসেবে ঘোষণা দিতে হবে।