নারায়ণগঞ্জে কারাবন্দী আসামির লাশ উদ্ধার, কারা কর্তৃপক্ষ বলছে আত্মহত্যা

সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনকে হত্যার পর গ্রেপ্তার আসামি মো. তুষার
ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন হত্যা মামলার প্রধান আসামি মো. তুষারের (২৮) মৃত্যু হয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে তুষার কারাগারে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন (৫০) দৈনিক বিজয় পত্রিকার নিজস্ব সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করতেন। ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর রাতে অবৈধ গ্যাস–সংযোগ দেওয়া নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার বিরোধের জেরে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই দিন রাতেই পুলিশ চাকুসহ তুষারকে আটক করে। তুষার বন্দর উপজেলার আদমপুর এলাকার মৃত জামান মিয়ার ছেলে।

উচ্চ আদালত থেকে জামিনের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু জামিন না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন তুষার।

এই ঘটনায় নিহত ইলিয়াসের স্ত্রী জুলেখা বেগম বাদী হয়ে তুষারকে প্রধান আসামি করে আটজনের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় হত্যা মামলা করেন। গ্রেপ্তারের পর থেকেই তুষার কারাগারে বন্দী ছিলেন। তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছিলেন। পরে তদন্ত কর্মকর্তা তুষার ও তাঁর ভাই মো. দুর্জয়ের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। দুর্জয় জামিনে আছেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার নাশির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, গতকাল সন্ধ্যায় লকআপ বন্ধ করার আগমুহূর্তে তুষার সবার সঙ্গে মিশে অন্য একটি ভবনে ঢুকে পড়েন। পরনের চাদর ছিঁড়ে বারান্দার গেটের গ্রিলের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেন তিনি। এ সময় অন্য কয়েদি ও কারারক্ষীরা ঘটনাটি দেখে তাঁকে দ্রুত নামিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তুষারের মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

জেলার নাশির আহমেদ বলেন, সাংবাদিক ইলিয়াস হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে। কয়েক দিন আগে তুষারের সঙ্গে তাঁর মা দেখা করতে এসেছিলেন। উচ্চ আদালত থেকে তাঁর জামিনের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু জামিন না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন তুষার। সেই হতাশা থেকে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ফরহাদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে এক আসামি গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসাধীন অবস্থার তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।